আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারের সবচেয়ে পুরনো কারাগার ইনসেইনে সামরিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। শুক্রবার সকালে এই বিক্ষোভ শুরু হয় বলে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমসমূহের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি সরকারকে হটিয়ে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশটিতে, যা এখনও চলছে। অভ্যুত্থানের প্রায় ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও প্রতিদিন দেশটির বৃহত্তম শহর ও প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র ইয়াঙ্গুন, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়সহ ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে এখনও বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী জনগণ।
তবে কারাগারে বিক্ষোভ এই প্রথম ঘটল দেশটিতে এবং যে কারাগারে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, সেটি মিয়ানমারের প্রাচীনতম কারগার। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে এটি তৈরী করা হয়েছিল।
ক্ষমতাসীন জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে যারা গ্রেফতার হয়েছিলেন, তাদেরকে এই ইনসেইন কারাগারেই রেখেছে সামরিক সরকার।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক কারাবন্দিদের সহায়তা দানকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে কারাগারের নারী কয়েদিদের ব্লক থেকে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। পরে তা কারাগারের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি কয়েকজন কারারক্ষীও এই বিক্ষোভে অংশ নেন।
কারাগারের বাইরে থেকে ধারণ করা এই বিক্ষোভের একাধিক ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেসব ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে ‘সামরিক শাসন নিপাত যাক’ ‘প্রতিবাদ! প্রতিবাদ!’ ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’ প্রভৃতি বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
মিয়ানমারের কারা বিভাগের উপপরিচালক চ্যান নিয়েন কিয়াও দেশটির স্থানীয় পত্রিকা মায়াওয়াদিকে ইনসেইন কারাগারে বিক্ষোভের বিষটি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা ও সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কারাবন্দিরা।
মায়াওয়াদিকে তিনি বলেন, ‘ইনসেইন কারাগারে কারাবন্দিরা বিক্ষোভ করেছেন। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে কারাগারে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা ও কারাগারে স্বাস্থ্য উপকরণের দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন।’
‘তবে কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নিয়েছেন।’
ইনসেইন কারা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জৌ জৌ শনিবার মিয়ানমারের স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বর্তমানে কারাগারের পরিস্থিতি শান্ত আছে।
বিএসডি/এমএম