আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের গণআন্দোলনসহ নানান কারণে অস্থিরতায় পড়েছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প। এ বিষয়টি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের পোশাকের বাজার ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে পোশাক আমদানিকারকরা বিকল্প রপ্তানিকারক খুঁজছে। যার মধ্যে আছে ভারতও। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছে নয়াদিল্লি।
এর অংশ হিসেবে ভারত টেক্সটাইল এবং গার্মেন্টস খাতকে সমৃদ্ধ করবে। আগামী বাজেটে এজন্য বাড়তি আর্থিক সহায়তা রাখা, শুল্ক ছাড় দেওয়া এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির দুজন সরকারি কর্মকর্তা।
ভারতের পোশাক রপ্তানি প্রচার কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল মিথিলেশ্বর ঠাকুর রয়টার্সকে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি বিকল্প রপ্তানিকারক খুঁজছে। কিন্তু ভারত তাদের চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে।”
ভারতীয় পোশাকখাতে প্রায় ৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষ কাজ করেন। আগামী অর্থবছরের বাজেটে টেক্সটাইল মন্ত্রণালয়ের বাজেট ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে দেশটির সরকার। বর্তমানে এই মন্ত্রণালয়ে ৪৪ দশমিক ১৭ বিলিয়ন রুপি বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
এই স্কিমে যেসব প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে পোশাক উৎপাদন করবে তাদের কর প্রণোদনা ও অন্যান্য বিষয়ে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে ভারতীয় সরকার।
সরকারি এক কর্মকর্তা বলেছেন পলিয়েস্টার, ভিসকস ফাইবার, টেক্সটাইলের যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক বাতিলের বিষয়টি এ মুহূর্তে বিবেচনা করা হচ্ছে। বর্তমানে ভারতে ফাইবার আমদানিতে ১১ থেকে ২৭ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। যেখানে বাংলাদেশে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো শুল্কই নেই। বিষয়টি ভারতীয় পোশাক শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন এই সরকারি কর্মকর্তা।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভারতের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হবে। দেশটির বাণিজ্য ও টেক্সটাইল মন্ত্রণালয়কে পোশাক খাতে প্রণোদনা ও শুল্ক প্রত্যাহারের ব্যাপারে জানতে চেয়ে ইমেইল করেছিল রয়টার্স। তবে তারা কোনো জবাব দেয়নি।
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে। ইউএস অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের ডাটা থেকে দেখা গেছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি ০ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে ভারতের রপ্তানি ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
শহিদুল্লাহ আজিম নামের এক পোশাক কারখানা মালিক রয়টার্সকে বলেছেন, আমার বেশিরভাগ ক্রেতা হলো উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপিয়ান দেশগুলো। কিন্তু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কিছু আমেরিকান ক্রেতা ভারত ও ভিয়েতনামের দিকে ঝুঁকেছে।
সূত্র: রয়টার্স