নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি এবং জাহাঙ্গীরগনর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেছেন, বিগত সরকারের জনগণের মতামতবিহীন অবকাঠামোগত উন্নয়নতত্ত্বের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বা উড়াল সড়ক।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বাংলামোটরের প্ল্যানার্স টাওয়ারে আয়োজিত হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ ধ্বংস করে এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত প্রকৃতি বিধ্বংসী ও জনবিরোধী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সংযোগ সড়ক বাতিলের দাবিতে ৩১টি সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং নাগরিক সমাজ আয়োজিত নাগরিক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
নাগরিক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ২০০৫ সালে প্রণীত ঢাকার কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা বা এসটিপিতে ঢাকার টেকসই যোগাযোগ পরিকল্পনার জন্য আমাদের আর্থ-সামাজিক ও পরিকল্পনাগত বাস্তবতার নিরিখে বিভিন্ন প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিল। বাস্তবায়নের প্রাধিকারে সেখানে পেছনের সারিতেই ছিল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। তা সত্ত্বেও ঢাকার টেকসই পরিবহন পরিকল্পনার জন্য অল্প ব্যয়ে অধিক উপযোগী প্রস্তাবনাসমূহকে পেছনে রেখে ২০১১ সালে গৃহীত হয় ৩,২১৬ কোটি টাকার এই প্রকল্প।
তিনি বলেন, ঢাকাকে বাইপাস না করে, বরং ঢাকার একেবারে মধ্য দিয়ে গিয়ে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাংশন বা মোড়ে জালের মতো নতুন নতুন র্যাম্প যুক্ত করে দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আরও যানজট বাড়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই প্রকল্প, যা ঢাকাবাসীর ভোগান্তির কারণ ও হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পরিবেশগত সমীক্ষা প্রতিবেদনে এই উড়াল সড়কের কারণে পলাশী, কাটাবন এলাকায় ট্রাফিক এর উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে এবং নিচের রাস্তার উপযোগিতা কমে যাবে বলা হয়েছে। পান্থকুঞ্জ পার্কে বৃক্ষ নিধন ও পরিবেশ প্রতিবেশ বিনষ্ট হওয়ার বিষয়টাকে পরিবেশগত সমীক্ষা প্রতিবেদনে উপেক্ষা করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই এ নগর পরিকল্পনাবিদকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এলাকাবাসীর মতামত ও যথাযথভাবে নেয়া হয়নি এই প্রকল্পে।
নাগরিক সংলাপে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি), এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইআরডিএ), ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট, কলাবাগান ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, গ্লোবাল ল’ থিংকারস সোসাইটি, জলপুতুল পাপেটস, টিম ইনক্লুশন বাংলাদেশ, তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলন, নারীপক্ষ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এনডিএফ), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), পান্থকুঞ্জ প্রভাতী সংঘ, প্রাকৃতিক কৃষি, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষা জাতীয় কমিটি, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম, বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক), বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি), বাংলাদেশ ইকোলজিকাল নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম, বেঙ্গল ডিসকভার, ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভ (বিপিআই), রিভার বাংলা, সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স, এবং স্পৃহা।