নিজস্ব প্রতিবেদক
রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। ফলে যাত্রীদের জন্য বিকল্প হিসেবে বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে এরপরও যাত্রীদের ক্ষোভ যেন শেষ হচ্ছে না। সবার একটাই প্রশ্ন, আগে কেন জানানো হয়নি। অনেকে বলেন, বাসেই যদি যেতে হয় তাহলে রেল স্টেশন কেন?
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসা যাত্রীরা এই ক্ষোভের কথা জানান।
যাত্রীদের অনেকে সকাল থেকে স্টেশনে এসে ভিড় করছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে কেউ বাসে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন। আবার কেউ উপায় না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
ট্রেনে করে জামালপুর যাওয়ার জন্য টিকিট কাটেন আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, ট্রেনের টিকিট কেটেছিলাম সেটা ফেরত দিয়েছি। মন্তব্য করে কোনো লাভ নেই। কোনো সমাধান আসবে না, আমরা হতভাগা যাত্রী। দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের মূল্য আছে কি না সন্দেহ। নাগরিক হিসেবে আমাদের যে অধিকার সেই অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত। আমাদের সময়ের কোনো মূল্য নেই। আমরা যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারব কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। যারা দায়িত্বে আছেন তাদের মাথায় আদৌ কিছু আছে কি না আমার সন্দেহ।
তিনি আরও বলেন, বাসে কখন পৌঁছাব তা জানা নেই। এটা অনির্ধারিত। বাসা থেকে যে উদ্দেশ্যে বের হয়েছি, সেটা হয়ত পূরণ না। আমি হয়ত কাজটা করতে পারব না। আমি ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। অর্থনৈতিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সময় অপচয় হচ্ছে। জানমালের ক্ষতি হচ্ছে। এটার দায় কে নেবে? কেউ নেবে না। তারা ওপরে চেয়ারে বসে আছে, হাসি তামাশা ঠাট্টা করতেছে। নাগরিকদের নিয়ে হাসি তামাশা ঠাট্টা করবে, এটা ছাড়া কিছু করার নেই তাদের।
আরেক যাত্রী বলেন, ট্রেন হলো আরামদায়ক ও জনবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা। এখানে আমি ওয়াশ রুমে যেতে পারি, প্রয়োজন হলে নামাজ পড়তে পারি, প্রয়োজন হলে আমি খেতে পারি, সেটা কি বাসে সম্ভব হবে?
এদিকে ট্রেন বন্ধ থাকায় এর বিকল্প হিসেবে যাত্রীদের জন্য বাস চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আজ (মঙ্গলবার) সকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে সারাদেশে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ের বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটগুলোতে যাত্রী পরিবহনের জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা তাদের কেনা ট্রেনের টিকিটে বিআরটিসি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবেন। একইসঙ্গে উল্লেখিত জায়গাগুলো থেকে বিআরটিসি বাসের মাধ্যমে ঢাকাতেও আসতে পারবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু থাকবে।
উল্লেখ্য, বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করছেন রানিং স্টাফরা।