নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারে বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে বাহিনীর গুলিতে যুবক নিহত হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে সেটিকে অপপ্রচার বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর বলেছে, বিমানবাহিনীর গুলিতে যুবক নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন অপপ্রচার চলছে, যা সত্য নয়। ঘাঁটির ওপর কিছু স্থানীয় দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলায় বিমানবাহিনীর ৪ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, কক্সবাজারের বিমানবাহিনী ঘাঁটি সংলগ্ন সমিতিপাড়ার কিছু স্থানীয় দুর্বৃত্ত সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিমানবাহিনী ঘাঁটির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
ঘটনার সূত্রপাত উল্লেখ করে বলা হয়, বিয়াম স্কুলের পাশে বিমানবাহিনীর চেকপোস্ট থেকে একজন স্থানীয় লোকের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকায় বিমানবাহিনীর প্রভোস্ট কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাঁটির ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসময় সমিতি পাড়ার প্রায় দুই শতাধিকেরও বেশি স্থানীয় লোকজন বিমানবাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হলে বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বিমানবাহিনীর চেকপোস্ট এলাকায় বিমানবাহিনীর সদস্য ও সমিতি পাড়ার কিছু দুষ্কৃতকারী লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
ঘটনাস্থলে কুচক্রী মহলের ইন্ধনে দুর্বৃত্তরা বিমানবাহিনীর সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ে। তখন দুর্বৃত্তদের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে কয়েকজন আহত হয়। যার মধ্যে বিমানবাহিনীর ৪ জন সদস্য (১ জন অফিসার ও ৩ জন বিমানসেনা) আহত হন। বিমানবাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার্থে বিমানবাহিনীর সদস্য কর্তৃক বিমান বাহিনীর রুলস অব এনগেঞ্জমেন্ট অনুয়ায়ী ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। তবে স্থানীয় জনসাধারণের ওপর কোনো প্রকার তাজা গুলি ছোড়া হয়নি। শিহাব কবির নাহিদ নামের এক যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বিমানবাহিনীর গাড়িতে করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন। যুবক নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছে।
এমতাবস্থায় একটি কুচক্রী মহল বিমানবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিমানবাহিনীর গুলিতে যুবক নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যা সত্য নয়।
এক্ষেত্রে প্রচারিত গুলির খোসার ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, খোসাটি ফাঁকা গুলির, যা প্রাণঘাতি নয় এবং শুধু শব্দ তৈরি করে।
আইএসপিআর বলছে, এছাড়াও লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এ ঘটনা প্রকাশে কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে কক্সবাজার বিমানবাহিনী ঘাঁটির নাম শেখ হাসিনা বিমানবাহিনী ঘাঁটি হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে- যা সত্য নয়।
উল্লেখ্য, এ ঘাঁটির নাম ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর সরকারি প্রজ্ঞাপনে পরিবর্তন করে কক্সবাজার বিমানবাহিনী ঘাঁটি রাখা হয়; যা বর্তমানেও বহাল রয়েছে।
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী দেশের আকাশসীমা রক্ষার পাশাপাশি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের আপামর জনসাধারণের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বিমানবাহিনী দেশের মানুষের কল্যাণে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। দেশের জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও জানিয়েছে আইএসপিআর।