নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলামের ওপর নির্যাতন এবং কক্সবাজার পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদল ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
মঙ্গলবার (২০ মে) দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন।
তারা জানান, “ভুক্তভোগী ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, গত ১৮ মে দুপুরের দিকে ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী জবরদস্তিমূলকভাবে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র রাকিবুল ইসলামের মোবাইল ফোন চেক করে এবং তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন। এরপর রাত ৯টার দিকে ২৩-২৪ সেশনের ছাত্র পরিচয়ধারী ৮-১০ জন সন্ত্রাসী রাকিবুলের কক্ষে প্রবেশ করে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে একটি নির্জন স্থানে আটকে রাখে এবং লাগাতার শারীরিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের একপর্যায়ে তাকে সম্পূর্ণরূপে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয় এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এদিকে, কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল ছাত্রদল। কিন্তু গতকাল ১৯ মে অজ্ঞাত কারণে সেই দাবি পলিটেকনিকের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয় এবং তারা ইনস্টিটিউট অবরুদ্ধ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় শরফুদ্দিন সোহান, রবিউল হক, নূর মোহাম্মদ নাঈম, আফতাব আহমদ, সাব্বির আহমদসহ অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
শিবির নেতারা বলেন, এ ধরনের হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, মাহবুব মোল্লা কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক, কুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের শিক্ষার্থী নিপীড়নের ধারাবাহিকতা এবং পরিকল্পিত রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ।”
তারা বলেন, “আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গণে আবারও অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী সংগঠন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পেশিশক্তিনির্ভর ছাত্ররাজনীতি যেভাবে শিক্ষাঙ্গণকে জিম্মি করে রেখেছিল, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে সেই সংস্কৃতি ভেঙে পড়লেও দুঃখজনকভাবে ছাত্রদল এখন সেই পুরোনো অপরাজনীতি ফিরিয়ে আনার আয়োজন করছে। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের জন্য গঠনমূলক রাজনীতি উপহার দিতে ব্যর্থ হয়ে ছাত্রদল নিপীড়ন ও দায় চাপানোর রাজনীতি বেছে নিয়েছে।”
“আমরা সংঘটিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি, ছাত্রদল এই ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং শিক্ষার্থীদের ভাষা বুঝে লেজুড়বৃত্তি পরিহার করে শিক্ষাবান্ধব ও সুস্থ রাজনীতির ধারায় ফিরে আসবে।”