নিজস্ব প্রতিবেদক
৩৬ জুলাইয়ের বিপ্লবের পর বাংলাদেশ এখন নতুন স্বাধীনতার স্বাদ পেতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, এই নতুন স্বাধীনতাকে স্থায়ী রূপ দিতে হলে আগামী ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে মোহাম্মদপুর জোন জামায়াত আয়োজিত ইউনিট সভাপতি ও সেক্রেটারি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অঞ্চল পরিচালক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জিয়াউল হাসান, জোন টিম সদস্য আব্দুল ওয়াজেদ কিরন, ডা. শফিউর রহমান ও এডভোকেট আজহার মুন্সি প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ইতিহাসের এক চমৎকার সময় পার করছে। দেশের এ নতুন প্রেক্ষাপট এমনিতেই সৃষ্টি হয়নি। বিগত ৫৪ বছরে ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের অনেক ত্যাগ ও কোরবানি করতে হয়েছে। জেল-জুলুম, গ্রেপ্তার-রিমান্ড, কারা নির্যাতন এমনকি রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হয়েছে আমাদেরকে। এমনকি কথিত বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে আমাদের শীর্ষ নেতাদের হত্যাও করা হয়েছে। শুধু আমরাই নয় বরং ঐতিহাসিক বিজয়ের জন্য সাধারণ মানুষ সব শ্রেণি ও পেশার মানুষকে অকাতরে প্রাণ দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা দেশকে অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, গুম ও গুপ্তহত্যার মাধ্যমে দেশকে প্রায় কার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। ৩৬ জুলাই ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সে অবস্থার অবসান হয়েছে। তাই এ বিজয়কে টেকসই ও অর্থবহ করতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।
দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে ময়দানে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিগত প্রায় ১৬ বছর ছিল আওয়ামী জাহেলিয়াত। তারা মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকারসহ সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতার বীরোচিত অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে এবং তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ফলে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি। মানুষ তাদের অধিকার ভোগ করতে শুরু করেছে। যা আমাদেরকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। তাই দেশে যাতে নতুন করে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের উত্থান না ঘটে সে জন্য আমাদেরকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশ যাতে নতুন মাথা উঁচু করে নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে দাঁড়াতে পারে সে মহড়ায় প্রদর্শিত হবে আগামী ১৯ জুলাই। সেদিনই নির্ধারিত হবে আগামী দিনে বাংলাদেশের নেতৃত্বের আসনে কারা বসবেন। তিনি ১৯ তারিখের জাতীয় সমাবেশ সফল করতে সংগঠনের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের ময়দানে অকুতোভয় সৈনিকের ভূমিকা পালনের আহবান জানান।