- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (লাইন অব কন্ট্রোল) এলাকায় চীনের গতিবিধি নজরদারির মধ্যে রাখতে লাদাখে বিমানঘাঁটি তৈরি করছে ভারত। নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি হবে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত বিমান ঘাঁটি।
কারণ কুনলুন এবং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলভুক্ত লাদাখের জমিতে ঘাঁটি তৈরি করা হচ্ছে— সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সেটির উচ্চতা ১৩ হাজার ৭০০ ফুট। এখন পর্যন্ত এত উঁচুতে আর কোনো ঘাঁটি নির্মাণ করেনি ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী।
ভারতের প্রতিক্ষা বাহিনীর বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডেসহ বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য বিশেষভাবে নকশা করা এই বিমানঘাঁটিতি তৈরি করা হচ্ছে পূর্ব লাদাখের মুধি-নিওমা অঞ্চলে। ২০২১ সালে এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল ভারত সরকার। প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ২১৪ কোটি রুপি।
বর্তমানে জোরকদমে এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ। ইতোমধ্যেই ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রানওয়ে ইতিমধ্যেই নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, লাদাখ ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এটির চারপাশে রয়েছে কুনলুন ও হিমালয় পর্বতমালা, তিব্বত, ভারতের জম্মু ও কাশ্মির এবং হিমাচল রাজ্য। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর থেকেই লাদাখ নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরোধ চলছে চীন ও পাকিস্তানের। কারণ উভয়েই লাদাখকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ দাবি করে।
২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালাওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ও চীনা সেনবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘাত হয়। সেই সংঘাতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় এবং ৪৫ জন চীনা সেনা নিহত হয়েছিলেন। তার পর গত ৫ বছরে চীন ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে, তবে এখনও বেইজিংয়ের প্রতি আস্থার অভাব বোধ করে নয়াদিল্লি।
কারণ গত কয়েক দশক ধরে চীন লাদাখ থেকে হিমাচল রাজ্য পর্যন্ত গোটা অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। ২০২৩ সালে একটি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি, সেখানে লাদাখ থেকে হিমাচল রাজ্য পর্যন্ত পুরো এলাকাকে চীনা ভূখণ্ড হিসেবে প্রদর্শন করা হয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নিওমা’র অবস্থান ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছে হওয়ায় কারণে কৌশলগতভাবে এই বিমান ঘাঁটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি ভারতের উত্তর সীমান্ত, বিশেষ করে প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চল—যেখানে স্থল পরিবহণ কঠিন, সেখানেও পৌঁছে যাওয়া যাবে অতি দ্রুত।