সরকারের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনে অক্টোবরেই একটা চূড়ান্ত দফারফায় পৌঁছাতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্য থেকে দলটি ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ, ঘেরাও ও অবরোধের মতো কর্মসূচি চিন্তায় রেখেছে। আর সরকার ও আওয়ামী লীগ যেকোনো মূল্যে যথাসময়ে নির্বাচন করার অবস্থানে থেকে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক শক্তি নিয়ে মাঠে থাকার পরিকল্পনা নিয়েছে।
কোনো পক্ষ থেকেই ছাড় দেওয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই; বরং অক্টোবর মাসেই রাজধানীর রাজপথ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চিন্তা থেকে কর্মসূচি সাজাচ্ছে বিরোধী দল বিএনপি। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ থাকলেও আওয়ামী লীগ ঢাকার মাঠের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পাল্টা কৌশল ঠিক করার কথা বলছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হুমকিতে অক্টোবরে রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে, এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে।
দুই দলের অক্টোবরের প্রস্তুতি দেখে এটা বলা যায়, রাজনৈতিক বিরোধ পরিস্থিতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে—এই শঙ্কা থেকে যায়।
আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নভেম্বরের শুরুতে তফসিল ঘোষণা করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন। এর আগের মাস অক্টোবরে মাঠে ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে সরকারের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টা করবে বিএনপি। কারণ, ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এখন তাদের আন্দোলনকে অস্তিত্বের লড়াই হিসেবে দেখছে। আওয়ামী লীগ সরকার যদি তাদের মতো করে নির্বাচন করতে পারে, সেটি হবে বিএনপির জন্য চরম বিপর্যয়। সে জন্য দলটি সর্বশক্তি দিয়ে এখন মাঠে নামার কথা বলছে।
টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের জন্যও এবারের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক প্রশ্ন থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার তাদের মেয়াদ পুরো করছে। তবে এবারের নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দলটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোটের আন্দোলনের চাপ যেমন রয়েছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। দেশি-বিদেশি চাপের মুখে নমনীয় হলেই পরাজয় হবে এবং আওয়ামী লীগ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। ফলে যথাসময়ে নির্বাচন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দিক থেকেও পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা ক্ষমতাসীন দলের।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক গতকাল বলেন, ‘পরিস্থিতি আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করব। যথাসময়েই নির্বাচন হবে। কেউ যাতে নির্বাচন বানচাল করে কোনো শূন্যতা সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সজাগ থাকবেন। আমাদের কিছু ভুলত্রুটি থাকলেও সামগ্রিক বিবেচনায় মানুষ আমাদের সমর্থন করবে।’
বিএসডি/এসএস