নিজস্ব প্রতিবেদক:
সারাবিশ্বে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ। এতে বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠছে পৃথিবী। ১৯৭০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা ৮-১০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে বরফ গলে যাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন প্রয়োজনে গাছপালা কাটা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। কলকারখানা বেড়ে যাওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
‘নগরীয় কর্মপ্রন্থা প্রয়োগ করি, কার্বনমুক্ত বিশ্ব গড়ি’ প্রতিপাদ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের আয়োজনে আলোচনা সভা বাস্তবায়ন করে জেলা প্রশাসন। সোমবার (০৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ থেকে বাঁচার উপায় হলো বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করা। অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের বিরূপ পরিস্থিতি ও ক্ষতির মোকাবিলা করতে হয় সারাবিশ্বের স্বল্পোন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোকে। অথচ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী উন্নত দেশের কার্যক্রম। উন্নত দেশগুলোর জনসংখ্যা সারাবিশ্বের তুলনায় এক-পঞ্চমাংশ। অথচ তারাই পৃথিবীর অর্ধেক কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে। পরিস্থিতি বিবেচনায় বসবাস উপযোগী পৃথিবী গড়ে তুলতে বনায়নের কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে সভায় গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহসিন আলী বলেন, জাতিসংঘের আয়োজনে ১৯৮৬ সাল থেকে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার দিবসটি পালন করা হয়। দেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ অনুযায়ী বাসস্থান পাওয়া জনগণের মৌলিক অধিকার। এছাড়াও এসডিজি গোলের ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ ও কম খরচে বস্তিবাসীর উন্নয়ন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এটি সরকারের কাজ নয় বা তা সম্ভবও নয়। স্থানীয় সরকার শাখা, কর্পোরেট এজেন্সি, সমিতির মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, শতকরা ২৪ শতাংশই কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে উৎপাদনমুখী কলকারখানা থেকে। তাই পোড়া ইটের বিপরীতে কংক্রিটের ব্লক ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। এমনকি ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি কাজে পোড়ানো ইটের বিপরীতে কংক্রিটের ব্লক ব্যবহার করার সিধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ ইটভাটাগুলোর কারণেই অনেক বৃক্ষ নিধন করতে হয়। এটির টেকসই সমাধান করতে পারলে পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত সরকার বলেন, গ্রিন হাউজ প্রক্রিয়া কমানোর ফলে সারাবিশ্বে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারলে ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণের পরিমাণ সহনশীল মাত্রায় নেমে আসবে।