নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে অধিকাংশ গাছের মুকুল থেকে ইতিমধ্যে বেরিয়ে পড়েছে আমের গুটি। কিন্তু গাছে গাছে আমের গুটি দেখা গেলেও দীর্ঘ দেড় মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় আমের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে চিন্তিত হয়ে পড়েছে আম ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫ উপজেলায় আমবাগান রয়েছে ৩৮ হাজার হেক্টর এবং গাছের সংখ্যা প্রায় ৫৮ লাখ। এ মৌসুমে প্রায় ৮০ ভাগ গাছে মুকুল আসে এবং বর্তমানে গুটি দেখা দিয়েছে। জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হওয়ায় এই আমকে ঘিরেই এখানকার অঞ্চলের মানুষ জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষের মুখে হাসি হারিয়ে গেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর, নয়াগোলা, কোর্ট এলাকা ও শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটসহ বেশ কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, আমের গুটি বের হওয়া শুরু করেছে। কোনোটি আকারে ছোট, আবার কোনোটি একটু বড়। বৃষ্টি না হওয়ায় আমের গুটি স্বাভাবিক কারণে বড় হচ্ছে না। বিষয়টি আম চাষিসহ বাগান মালিকদের ভাবিয়ে তুলেছে।
কাইউম হোসেন নামে এক আম ব্যবসায়ী জানান, এবছর আমের গুটি মোটামুটি এসেছে। তবে চলতি সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে বৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত বৃষ্টি আর নেই। আশায় বুক বেঁধেছিলাম হয়তো ফলন ভাল হবে। তবে এই মৌসুমে পুরনো আম গাছগুলোতে মুকুল নেই বললেই চলে। মুকুলের পরিবর্তে অধিকাংশ গাছগুলোর ডগায় কচি পাতা এসেছে।
আমবাগান মালিক নুরুল ইসলাম জানান, এবছর আশানুরূপ মুকুল আসেনি। আর সময়মতো আমের গুটি আসলেও এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বেশ চিন্তার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তবে সামর্থ্য অনুযায়ী আমগাছে পানি দিয়ে স্প্রে এবং গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, এবার গাছে গাছে মুকুল আসার পাশাপাশি গুটিও সময়মত এসেছে। তবে ১৫ ফেব্রুয়ারির পর থেকে এ জেলায় এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। এ মুুহূর্তে বৃষ্টি হলে ফলন ভাল হবে, না হলে আম উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।
তিনি আরও জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন পর্যন্ত এই জেলায় বৃষ্টি নেই। পানির জলাধার থেকে সেচের মাধ্যমে গাছ স্প্রে করলে আমের গুটি রক্ষা পাবে। খরার কারণে গাছগুলোতে পানি শূন্য হয়ে পড়ছে, সেহেতু গাছের গোড়া একটু গর্ত করে পানি দিলে গাছগুলোও পানি শূন্য থেকে রক্ষা পাবে।
বিএসডি/ এলএল