বেসরকারি নর্দান মেডিকেল কলেজের দুর্নীতি চরমে পৌঁছেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন না থাকলেও বিভিন্ন মামলার কাগজপত্র দেখিয়ে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে আসছিল। পাস করার যাওয়া পরও ইন্টার্নশিপ করতে না পারায় রেজিস্ট্রেশনসহ অন্য প্রতিষ্ঠানে মাইগ্রেশনের দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা।
এর মধ্যেই, রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাতে নর্দান মেডিকেল কলেজের ৩২ নেপালি শিক্ষার্থীকে হোস্টেল থেকে বের করে দেয় বাড়ির মালিক। গভীর রাতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়ায় সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে দেশীয় শিক্ষার্থীদের সহায়তায় নেপালি শিক্ষার্থীরা রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণেই তাদেরকে হোস্টেল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কোনো রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মালিকপক্ষ কৌশলে তাদেরকে রাত ১১টার দিকে হোস্টেল থেকে হুমকি ধামকি দিয়ে বের করে দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নর্দান মেডিকেল কলেজের ১০ম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এ পরিস্থিতিতে নেপালি শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মিলছে না। বরং নেপালি শিক্ষার্থীদের সহায়তা করায় কর্তৃপক্ষের ভাড়াটিয়া গুন্ডাবাহিনী দেশীয় শিক্ষার্থীদের হুমকি দিচ্ছেন। তারা চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজের নিবন্ধন নেই। এ ব্যাপারে তারা কয়েকদফা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই তাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইন্টার্নশিপ করতে গিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। এমতাবস্থায়, দ্রুত মাইগ্রেশনের অনুমোদন দিতেও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে নর্দান মেডিকেল কলেজের পরিচালক আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে একটি অসাধু মহল পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা সাজিয়েছে। দেশের সম্মান রক্ষা এবং করোনা মহামারির মধ্যেও বিদেশি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের টিউশন ফি মওকুফ করা হয়েছে। তাদের কোনো ভয়ভীতি দেখিয়ে আবাসিক থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা মিথ্যা বলেও জানান তিনি।
এদিকে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নেপালিদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দিতে তারা সবসময় সচেষ্ট আছেন।