আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জন্য নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো হিসেবে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেম স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) ২ হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে পাওয়া ঋণ ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা একনেক সভায় অংশ নেন। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত SEA-ME-WE-6 সাবমেরিন ক্যাবলটি ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূ-মধ্য সাগর অবধি বিস্তৃত হবে। ক্যাবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিশর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারস্থ ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। তাই প্রকল্প এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে। অক্টোবর ২০২০ থেকে জুন ২০২৪ পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় হবে প্রকল্পে।
প্রকল্পের আওতায় সাবমেরিন ক্যাবল ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে স্থাপন করা হবে। ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার কোর সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনসহ এক হাজার ৮৫০ কিলোমিটার ব্রাঞ্চ সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে। যন্ত্রপাতি স্থাপন করে লাইট আপ করা এবং সিংগাপুর ও ফ্রান্স ল্যান্ডিং স্টেশনে ক্যারিয়ার নেচারাল পর্যন্ত ল্যান্ড ক্যাবল সংযোগ স্থাপন করা হবে। ল্যান্ডিং স্টেশনে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থাপন, ডাটা সেন্টারের অবকাঠামো ও বৈদ্যুতিক কাজ, একটি ৫০০ কেভিএ স্ট্যান্ড বাই-ডিজেল জেনারেটর স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় অগ্নি নির্বাপণ বস্থা এবং শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য ভবন এবং একটি আন্তর্জাতিক মানের রেস্ট হাউজ নির্মাণ, ২৪২৮ বর্গফুট দোতলা (নিচতলা খালি) ফাংশনাল বিল্ডিং নির্মাণ এবং দুই হাজার ৫৯৫ বর্গফুট তিনতলা রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হবে। একনেক সভায় ৯০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
৩ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ (১ম সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুই হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মিউনিসিপ্যাল গভার্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) (২য় সংশোধিত) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণসহ মৌলিক নগর পরিষেবা বৃদ্ধি, পৌর গভার্ন্যান্স, আর্থিক পরিচালনা এবং নিজস্ব-উৎস আয় বৃদ্ধিতে দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে।