নিজস্ব প্রতিবেদক,
বগুড়ায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে পায়ুপথে ফোঁড়ার অপারেশন করাতে গিয়ে মশিউর রহমান মিলু (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জ পাড়ার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। মিলু বগুড়া শহরের বড়গোলায় ঢেউটিনের ব্যবসা করতেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ক্লিনিকে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি।
গতকাল সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বগুড়া শহরের কলোনী এলাকায় রেইনবো কমিউনিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে ক্লিনিকের ডাক্তার ও নার্সরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এর আগে দুপুরের পর মিলুকে রেইনবো কমিউনিটি ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাফর সাদিক রোগীর পায়ুপথে ফোঁড়ার অপারেশন করেন।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, ডাক্তার অপারেশন করে চলে যাওয়ার পর রাত ৯টার দিকে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এসময় ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। এ নিয়ে ক্লিনিকের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক চলতে থাকে। এক পর্যায় রোগীর অবস্থা আরো অবনতি হলে স্বজনরা হৈচৈ শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ক্লিনিকে ভিড় জমায়।
এসময় ক্লিনিকের চিকিৎসক নার্স সেখান থেকে পালিয়ে যান। রাত ১০টায় ক্লিনিকের একজন কর্মচারী অ্যাম্বুলেন্স ডেকে স্বজনদের সহযোগিতায় তড়িঘড়ি করে রোগীকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে খবর পেয়ে বনানী ফাঁড়ি থেকে পুলিশ পৌঁছে বহিরাগতদের ক্লিনিক থেকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ দাফন হয়েছে। কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ওই ব্যক্তি পায়ুপথের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে রেইনবো কমিউনিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারীরা জানান, ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাউছুল আজম সন্ধ্যার পর থেকে ক্লিনিকে থাকাকালে হৈচৈ শুরু হলে তিনি চলে যান। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ করে রাখে।
বগুড়া শহরের বনানী পুুলিশ ফাাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ক্লিনিকে পৌঁছে ডাক্তার, নার্স কাউকে পাওয়া যায়নি। রোগীর লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে তড়িঘড়ি করে রোগীকে মেডিকেলে পাঠানো হয়।
বিএসডি/আইপি