আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিজের দেশে ফিরতে উৎসাহিত করতে এক হাজার ইউরো নগদ অর্থ দেবে লিথুয়ানিয়া সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে।
ডেইলি সাবার খবরে বলা হয়েছে, যে অভিবাসনপ্রত্যাশী নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইবে, তাকে সীমান্তরক্ষীদের পক্ষ থেকে একটি বিমানের টিকিট ও এক হাজার ইউরো নগদ অর্থ দেওয়া হবে। এর আগে, দেশে ফেরত যেতে আগ্রহী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য বরাদ্দ ছিল মাথাপিছু তিনশ ইউরো।
লিথুয়ানিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনিয়ে বিলোতাইতে বলেন, ‘এদের মধ্যে বেশিরভাগের আশ্রয়ের আবেদন আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। কিন্তু এখন এদের দেশে ফেরত পাঠানো প্রয়োজন। এই টাকার অঙ্ক বাড়ানোর ফলে আমরা আশা করছি আরও বেশি মানুষকে দেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হবো।’
চলতি বছরের গ্রীষ্মে, হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীরা বেলারুশ থেকে ইউরোপিয়ান সদস্য রাষ্ট্র লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ডের দিকে এগিয়ে আসেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মতে, বেলারুশ ইইউকে চাপে রাখতেই এমনটা করছে। অন্যদিকে মিনস্ক এই সকল অভিযোগকে স্রেফ অস্বীকার করে আসছে।
এই অভিবাসনের বিপুল স্রোতের ফলে লিথুয়ানিয়া কর্তৃপক্ষের কাছে আশ্রয় আবেদনের বাড়তি চাপ এসে পড়ে। এই বিশাল সংখ্যক আশ্রয় আবেদনের সবকটিকে খুঁটিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজ মাত্র এই সপ্তাহে শেষ করতে পেরেছে লিথুয়ানিয়া কর্তৃপক্ষ।
লিথুয়ানিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি :
মোট তিন হাজার ২৭২টি আশ্রয় আবেদনের মধ্যে মাত্র ৫৪টি আবেদন গৃহীত হয়েছে। বাকি সবার আবেদনই খারিজ করেছে লিথুয়ানিয়া। কর্তৃপক্ষের মতে, আবেদন খারিজ হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দেশে ফেরত পাঠানো খুবই দীর্ঘ ও কঠিন প্রক্রিয়া, কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন দেশ ফিরে আসা নাগরিকদের গ্রহণ করতে চায় না।
অন্যদিকে, ইরাক ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে চালু রয়েছে একটি ‘নো রিঅ্যাডমিশন’ চুক্তি, যার ফলে ইরাকি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অমতে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ, ইরাক থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরাই লিথুয়ানিয়াসহ বর্তমান অভিবাসন স্রোতের বড় অংশ জুড়ে রয়েছেন।
এইসব জটিলতাকে কিছুটা হলেও মোকাবিলা করতে অর্থ সাহায্যের পথ বেছে নিয়েছে লিথুয়ানিয়া, যাতে করে দেশে ফিরতে সায় দেয় বেশি সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটা অংশ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র লিথুয়ানিয়াতে ঢুকে যেতে পারলেও, সীমান্ত রক্ষীরা অন্তত আট হাজার ৯০০জনকে জোর করে সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগকারী মানবাধিকার সংগঠনগুলো এভাবে ফেরত পাঠানোকে ‘পুশব্যাক’ বলে থাকে।
লিথুয়ানিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় যে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দেশে ফেরত পাঠাতে যে অর্থ খরচ হবে, তা আসবে ইউরোপিয়ান কমিশনের দেয়া অর্থ থেকে। সম্প্রতি, অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় লিথুয়ানিয়াকে অর্থ সাহায্য করে কমিশন। সূত্র : ডেইলি সাবা/ ইনফোমাইগ্রেন্টস
বিএসডি /আইপি