বিনোদন ডেস্ক:
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সরাতে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এসব ছবি ও ভিডিওকে অশ্লীল আখ্যা দিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তা অপসারণ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া পরীমনিকে ভবিষ্যতে সব ধরনের অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে ওই নোটিশে।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার ও ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী ইসমাতুল্লাহ লাকী তালুকদার এই নোটিশ দিয়েছেন। সোমবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বিএফডিসির ঠিকানায় পরীমনিকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, পরীমনি গত ১ সেপ্টেম্বর মাদক মামলায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় তার হাতের তালুতে লেখা ছিল ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর পরীমনি মামলার শুনানির জন্য আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। সেদিনও হাতের তালুতে যা লেখা ছিল তা অশ্লীল।
এছাড়া পরীমনি গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার হোটেল রেডিসন ব্লুতে ৩০তম জন্মদিন পালন করেন। সে দিন তার পোশক ও প্রদর্শিত অঙ্গভঙ্গি অশ্লীল বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, পরীমনি একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। তাকে অনেকেই তাকে অনুসরণ করে। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। শিশু-কিশোরদের গন্ডি ছোট থাকে। চোখের সামনে তারা যা দেখে অনায়াসে তা আয়ত্ত করে ফেলে। তাই পরীমনি এ বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
আইনি নোটিশে বলা হয়, পর্নোগ্রাফি আইন-২০১২ সালের ২ এর ‘গ’ উপধারায় ‘যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোনো অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য যা চলচ্চিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও ভিজ্যুয়াল চিত্র, স্থির চিত্র, গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণ করা ও প্রদর্শনযোগ্য এবং যার কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই’ তাকে পর্নোগ্রাফি বলা হয়েছে।
এ ধরনের অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে একই আইনের ৮ ধারার ৪ উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি প্রর্শনের মাধ্যমে গণউপদ্রব সৃষ্টি করলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন এবংএরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পর্নোগ্রাফি আইনের অপরাধগুলো আমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য নয়।
পরীমনি পর্নোগ্রাফি আইনে গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণ করা ও প্রদর্শনযোগ্য এবং যার কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই সংজ্ঞা মতে অপরাধ করেছেন। বাংলাদেশের সমাজ, সংস্কৃতির সুন্দর ঐতিহ্য আছে। পরীমনির কাছ থেকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের একজন শিল্পী হিসাবে সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ সবাই প্রত্যাশা করে।
নোটিশে আইনজীবীরা বলেন, নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে পরিমনি যদি অশ্লীল সব অডিও-ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে না নেন এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত না থাকেন; তবে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল মাদকসহ পরীমনিকে গ্রেফতার করে র্যাব। ১ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন এ চিত্রনায়িকা।
এর আগে রাজধানীর একটি ক্লাবে মারধর ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগে করে আলোচনায় আসেন এই অভিনেত্রী।
বিএসডি/ এলএল