নিজস্ব প্রতিবেদক,
সবেমাত্র আমরা ঈদুল আজহা উদযাপন করেছি। যাদেরকে আল্লাহতায়ালা সামর্থ্য দিয়েছেন তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে পশু কুরবানি করেছেন এবং গরিব-অসহায়দের মাঝেও বণ্টন করেছেন। তাদের কুরবানির পশুর চামড়ার অর্থও হয়তো দান করা হয়ে গেছে বা এখনও করছেন।
দেড় লাখ টাকার গরুর চামড়া কেনা হচ্ছে ১০০ টাকায়। তারা একবারও ভাবেনা যে, আমরা যে কাজ করছি তা অন্যায়। কেননা এটি গরীবের হক। তাই আশা করি আগামীতে চামড়া ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে সতর্ক হবেন।
আরেকটি বিষয় আমরা লক্ষ্য করেছি কুরবানির পর কুরবানির মাংসের চর্বি কেনার জন্যও এক শ্রেণির ক্রেতাকে দেখা যায়। যা বিক্রি করা ইসলামে নিষেধ রয়েছে। কেননা কুরবানির পশুর গোশত, চামড়া, চর্বি বা অন্য কোনো কিছু বিক্রি করা জায়েজ নেই। তবে চামড়া বিক্রি করা যেতে পারে, কিন্তু টাকা গরিবদের দান করতে হবে।
হাদিসে এসেছে- হজরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত, তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিজের কোরবানির জানোয়ারের পাশে দাঁড়াতে আর এগুলোর সমুদয় গোশত, চামড়া এবং পিঠের আবরণসমূহ বিতরণ করতে নির্দেশ দেন এবং তা হতে যেন কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছুই না দেয়া হয়। (বোখারি)
অপর এক স্থানে এভাবে বর্ণিত হয়েছে- হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তার কোরবানির উটের দেখাশোনা করতে আদেশ করেছেন। আর বলেছেন, আমি যেন কোরবানির পশুর গোশত, চামড়া জিন সদকা করে দেই। এবং কুরবানীর পশু থেকে যেন কসাইয়ের পারিশ্রমিক না দেই। তিনি বলেছেন, কসাইয়ের পারিশ্রমিক আমরা নিজেদের পক্ষ থেকে দিব। (সহিহ মুসলিম)
আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি উদ্দেশ্যেই এ কুরবানি। মূলত আল্লাহর কাছে রক্ত-মাংস কিছুই পৌঁছে না। আল্লাহ মানুষের অন্তর দেখেন।
ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে কুরবানির চামড়া দান করা উত্তম। তবে কুরবানি দাতা যদি চামড়া নিজে ব্যবহার করতে চায়, তবে সে তা ব্যবহার করতে পারবে। তাতে কোনো নিষেধ নাই। কোরবানিদাতা নিজে কোনভাবেই চামড়ার মূল্য খরচ করতে পারবে না। অসহায়-গরীব যারা জাকাত, ফিতরা গ্রহণের উপযুক্ত তারাই কুরবানির চামড়ার অর্থ পাওয়ার হকদার।
তাই কুরবানির চামড়ার অর্থ এর সঠিক হকদারের হাতে আমাদের তুলে দিতে হবে। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা অনুসরণ করার ও মান্য করার তাওফিক দান করুন, আমিন।
বিএসডি/আইপি