১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশে আইনের শাসন ভুলণ্ঠিত হয়ে পড়ে৷ সেখান থেকে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবী ও আইনমন্ত্রী হিসেবে আব্দুল মতিন খসরুর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আইনি লড়াইয়ে কিংবা সংসদের বক্তব্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার পাশাপাশি জনগণের পক্ষে রায় নিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষমতা ছিল তার৷
শনিবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘নাগরিক সমাজ ও জনতার প্রত্যাশা’ আয়োজিত আব্দুল মতিন খসরুর স্মরণসভার বক্তারা এসব কথা বলেন৷
স্মরণসভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, মন্ত্রী কিংবা সংসদ সদস্যের চেয়েও বড় বিষয় তিনি আমাদের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ছিলেন৷ তিনি ক্লান্তিহীনভাবে দলের জন্য কাজ করে গেছেন৷ আইনি লড়াইয়ে কিংবা সংসদে বক্তব্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার পাশাপাশি জনগণের পক্ষে রায় নিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষমতা ছিল তার৷
তিনি বলেন, আব্দুল মতিন খসরুর সবচেয়ে বড় গুণ ছিল তার কাছে সহজে পৌঁছানো যেত৷ তার বাড়িতে কোনো সদর দরজা ছিল না৷ কর্মীদের জন্য তার দরজা অবারিত ছিল৷ কর্মীদের জন্য তার বাড়িতে ছিল লঙ্গরখানা৷ তিনি কর্মীবান্ধব ও জনবান্ধব ছিলেন৷ পেশাগত দিক থেকে শুধু নয়, মানবিক বোধ থেকে কোনোপ্রকার প্রশ্ন ছাড়া তিনি সবার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন৷
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশে আইনের শাসন ভুলণ্ঠিত হয়েছিল৷ সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছিল৷ ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যে আলোর পথে যাত্রা শুরু হয়, সেই যাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহযোগী ছিলেন আবদুল মতিন খসরু৷ তিনি বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন৷
তিনি বলেন, শুধুমাত্র একটি কাজের জন্য যদি আব্দুল মতিন খসরুকে মনে রাখতে হয়, সেটি হলো- বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার রোধে জারি ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল৷
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, তিনি অত্যন্ত গুণী মানুষ ছিলেন৷ পাঁচবারের সংসদ সদস্য ও আইনজীবী হিসেবে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন৷ আইনজীবী হিসেবে তিনি সফল৷ বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারে তার যে ভূমিকা, তা আমার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে৷ আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে৷
স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, নাগরিক সমাজের সভাপতি ব্যারিস্টার সোহরাব খান, জনতার প্রত্যাশার সভাপতি এমএ করিম প্রমুখ।