স্পোর্টস ডেস্ক
ঘরোয়া ফুটবলে সাধারণত লিগ ও ফেডারেশন কাপই ছিল মূলত প্রতিযোগিতা। এরপর মাঝে-মধ্যে কখনো স্বাধীনতা কাপ/সুপার কাপ ছিল। আগামী মৌসুমে বাফুফের পেশাদার লিগ কমিটি পাঁচটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সভা শেষে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান বলেন, ‘এবারের মতো আগামী মৌসুমের উদ্বোধনও চ্যালেঞ্জ কাপ (লিগ ও ফেডারেশন কাপ সেরা) দিয়ে হবে। এরপর লিগের মাঝে মাঝে চলবে ফেডারেশন কাপ। দুই লেগের মাঝ খানে সুপার কাপ এবং সবার শেষে শুধু স্থানীয় ফুটবলারদের দিয়ে স্বাধীনতা কাপ টুর্নামেন্ট।’
স্বাধীনতা কাপ টুর্নামেন্ট মৌসুমের একেবারে শেষ করার কারণ হিসেবে বাফুফের অন্যতম শীর্ষ এই কর্মকর্তার ব্যাখ্যা, ‘মৌসুমের শুরুতে ক্লাবগুলো বিদেশি খেলোয়াড় আনবে। বিদেশি খেলোয়াড় বসিয়ে রেখে কোনো ক্লাবই টুর্নামেন্ট বা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে না। লিগের পর বিদেশি খেলোয়াড় চলে গেলে তখন শুধু দেশিদের নিয়ে স্বাধীনতা কাপ হবে।’
বাফুফের সাবেক সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ২০০৯ সালে কোটি টাকার টুর্নামেন্ট সুপার কাপ আয়োজন করে চমক দিয়েছিলেন। সেটা ছিল ফুটবলের নবজাগরণের একটি অংশ। ২০১১ ও ২০১৩ সালের পর এই টুর্নামেন্ট আর আয়োজন হয়নি। সুপার কাপ মানেই কোটি টাকার আকর্ষণ। আগামী বছরও সেই টুর্নামেন্টের পুরস্কার কোটির অঙ্কই রাখার পরিকল্পনা এবং দল সংখ্যা লীগের শীর্ষ চার-ছয়টি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাফুফের লিগ কমিটি এই মৌসুমেই সুপার কাপের আয়োজনের পরিকল্পনা করলেও দেশের রাজনৈতিক উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে সুপার কাপ ও স্বাধীনতা কাপ এই দুই টুর্নামেন্ট থেকে সরে এসেছে। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। জাতীয় নির্বাচনের পর ফুটবল ক্লাবগুলোর আর্থিক অবস্থা, ফেডারেশনের পৃষ্টপোষকতাও একটি বিষয়। এরপরও প্রথম বারের মতো ঘরোয়া ফুটবলে পাঁচটি আসরই আয়োজন করতে চায় লিগ কমিটি, ‘আমরা আশাবাদী পাঁচটি প্রতিযোগিতাই আয়োজনের ব্যাপারে।
আগামী মৌসুমে খেলোয়াড় নিবন্ধন ও বিদেশি খেলোয়াড় ব্যবহারে খানিকটা পরিবর্তন আসবে। এএফসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৫ জন নিবন্ধিত ফুটবলারের মধ্যে ১০ জন অনুর্ধ্ব ২৩ হতে হবে। বাফুফের লিগ কমিটি সেটার পাশাপাশি ২৩ জনের স্কোয়াডে তিন জন এবং একাদশে অন্তত একজন খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েক মাস আগে অনূর্ধ্ব-১৮ খেলোয়াড় একাদশে খেলানো বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত নিলেও নির্বাহী কমিটির সভায় সেটা বাতিল হয়। ফলে এটার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন ক্লাব পর্যায়ের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এশিয়ান কোটায় একজন খেলানোর বাধ্যতা উঠিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশেও আগামীতে এই কোটা থাকছে না। ৬ জনের মধ্যে যে কোনো মহাদেশের চার জন খেলোয়াড় খেলাতে পারবে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ। ৪ মার্চ থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এই স্তরে খেলার জন্য বিআরটিসি, লিটল ফ্রেন্ডস, আরামবাগ, বারিধারা, ওয়ারী , পিডব্লিউডি,বাফুফে এলিট একাডেমী, ফরাশগঞ্জ, ঢাকা রেঞ্জার্স ও নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব অনুমোদন পেয়েছে। এগারো দলের মধ্যে শীর্ষ দু’টি দল প্রিমিয়ারে উঠবে আর সর্বনিম্ন দুই দল প্রথম বিভাগে অবনমিত হবে। বিসিএল কখনো এত সংখ্যক দল খেলেনি। এই স্তরে পাতানো খেলার গুঞ্জন থাকে বেশি। দল সংখ্যা বাড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার মান যেমন কমার সম্ভাবনা রয়েছে পাশাপাশি পাতানো খেলার শঙ্কা আরো বাড়তে পারে। এ নিয়ে লিগ কমিটির চেয়াম্যানের মন্তব্য, ‘আমরা লিগ শুরুর আগে ক্লাবগুলোকে নিয়ে একটি সচেতনামূলক সেমিনার করব। এছাড়া আমাদের পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি সহ অন্যান্য বিষয় কাজ করবে।