আন্তর্জাতিক ডেস্ক,
অল্পবয়সী একজন নারীর গতি রোধ করে তালেবান প্রশ্ন করে, পুরুষ অভিভাবক ছাড়া কেন একা ঘুরে বেড়াচ্ছেন? ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
কাবুলের রাস্তায় ট্যাক্সিতে করে যাওয়া ওই নারীকে থামিয়ে দেওয়া হয় তালেবানের চেকপোস্টে। তারপর প্রশ্ন করা হয়, আপনার পুরুষ অভিভাবক কোথায়?
কাঁধে অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে তালেবান ওই নারীকে বলে, আপনার স্বামীকে ডাকুন। তখন ওই নারী জানান, তার কাছে মোবাইল নেই। এরপর একজন ট্যাক্সি চালককে ওই নারী বলেন, আপনি আমার বাড়ি গিয়ে আমার স্বামীকে এখানে নিয়ে আসুন। সে মোতাবেক ওই নারীর স্বামীকে চেকপোস্টে নিয়ে আসা হয়।
আফগানিস্তানে এখনো রাস্তায় গাড়ি চলছে, বাজারে আঙুর বিক্রি হচ্ছে, রাস্তায় শিশুরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। উপর উপর পুরো শহর ঠিক আছে বলে মনে হলেও, আসলে কিন্তু তা নয়।
তালেবানের ভয়ে পুরুষরা শেভ না করে দাড়ি লম্বা রাখছে। নারীরা রঙ-বেরঙের স্কার্ফের বদলে কালো রঙের বোরকা ব্যবহার করেছে। এছাড়া নিজেদের পোশাক এবং চাদরের দৈর্ঘ্য পরীক্ষা করে পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে বাইরে বের হচ্ছে।
সে দেশে ব্যাপক আতঙ্কে দিন কাটছে নারী বিচারকদের। নারী বিচারকদের আতঙ্কের অন্যতম কারণ হলো- যেসব অপরাধীকে তারা কারাদণ্ড দিয়েছিলেন, তালেবান বাহিনী কাবুল দখল করার পর প্রায় সব কারাবন্দিকে মুক্ত করে দেওয়ায় তারাও মুক্তি পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারামুক্ত অপরাধীদের কারণেই আফগান বিচারকদের জীবন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্যানুসারে, আফগানিস্তানে নারী বিচারক রয়েছেন ২৫০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজন দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। বাকিদের বেশিরভাগ আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন।
গত সপ্তাহে একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী ও নারী বিচারকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ওম্যান জাজেস (আইএডব্লিউজে) এর সদস্যদের সহায়তায় আফগানিস্তান ত্যাগে সক্ষম হয়েছেন একজন নারী বিচারক।
তিনি বলেছেন, নারী বিচারকরা খুবই ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় আছে এবং তাদের জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে।
জানা গেছে, আফগানিস্তানের যেসব নারী বিচারক আছেন, তাদের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আফগানিস্তানে নারী বিচারকদের প্রশিক্ষণের জন্য ১০ বছর মেয়াদি একটি কর্মসূচি চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
বিএসডি/এএ