আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানি তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে দেশটির সরকারের অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে আফগানিস্তানের তালেবান। আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর সশস্ত্র কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবানের নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এই তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার বিবিসির উর্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুত্তাকি বলেছেন, উভয় পক্ষের অনুরোধের পর আফগান তালেবান ওই পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি। তবে শুরুটা বেশ ভালো হয়েছে এবং আলোচনার প্রথম অংশে দুই পক্ষের মধ্যে এক মাসের অস্ত্রবিরতি চুক্তি হয়েছে।
আলোচনা অব্যাহত রাখতে উভয়পক্ষ রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তালেবানের এই নেতা। গত মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দেশটির কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে সরকার সমঝোতার আলোচনা শুরু করেছে বলে জানান।
গত আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানে তালেবানের অনুসারী টিটিপি নতুন করে আন্দোলন শুরু করে। দেশটিতে ইসলামি শরিয়া আইনের শাসন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ১৪ বছর ধরে সশস্ত্র বিদ্রোহ করে আসছে টিটিপি। এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন।
ভিন্ন নেতৃত্বের আলোকে গঠনতন্ত্র এবং লক্ষ্য আলাদা হলেও তালেবান এবং টিটিপির আদর্শ একই। অতীতে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তালেবানকে সহায়তা করেছে টিটিপি। ২০০৭ সালে আত্মপ্রকাশ করা টিটিপি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি ছাতা সংগঠন; যা দেশটিতে ইসলামী আইনের কঠোর ব্যাখ্যা আরোপ করতে চায়।
গোষ্ঠীটি পাকিস্তানের মাটিতে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী কিছু হামলাও চালিয়েছে। ২০১৪ সালে দেশটির একটি স্কুলে টিটিপির হামলায় ১৩৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী টিটিপির সঙ্গে দেশটির সরকার এক মাসের অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে জানান। এই অস্ত্রবিরতি চুক্তির মেয়াদ আগামী ৯ ডিসেম্বর শেষ হবে বলে জানিয়েছেন টিটিপির মুখপাত্র মুহাম্মদ খুরাসানি।