আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তানের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন তালিবান বাহিনীর সঙ্গে কাজ করার জন্য আফগান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বিবৃতির মাধ্যমে আহ্বানটি জানিয়েছেন। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা খবর জানিয়েছে।
ইইউর বিবৃতিতে বলা হয়, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য আফগান সরকারের উচিত অবিলম্বে তালিবান নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
জোসেফ বোরেল বলেছিলেন, বর্তমানের রাজনৈতিক মতপার্থক্য নিষ্পত্তি এবং একতার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা আফগান সরকারকে তালিবান বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে উৎসাহিত করছি।
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানের জন্য ইইউর অব্যাহত সহায়তার মূল চাবিকাঠি হলো বিদ্যমান সংকটের শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান। এর পাশাপাশি নারী ও সংখ্যালঘু নির্বিশেষে সব আফগান নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন প্রয়োজন।
এ দিকে কাবুলে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস থেকে জনবল আরও কমিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউর মিত্র রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র। খুব দ্রুত এসব কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। আর তাদের দেশে ফেরা নির্বিঘ্ন করতে সহায়তার জন্য আফগানিস্তানে অতিরিক্ত সাড়ে তিন হাজার সেনা পাঠাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছেন। তিনি বলেন, কাবুলের দূতাবাসটি এখনই পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে না। কিছু জনবল কমানো হলেও দূতাবাসের কার্যক্রম চলবে। যদিও ক্রমবর্ধমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের পদচারণা সীমিত করা হচ্ছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবির মতে, দূতাবাস কর্মীদের পাশাপাশি মার্কিন বিশেষ অভিবাসী ভিসা (এসআইভি) আবেদনকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনতেই সহায়তার জন্য মার্কিন প্রশাসন আফগানিস্তানে কিছু সংখ্যক সেনা সদস্যদের পাঠাবে। এটি একটি অস্থায়ী মিশন হওয়ায় এসব সৈন্যরা দেশটিতে দীর্ঘদিন অবস্থান করবে না। যদিও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মার্কিন বাহিনী আক্রান্ত হলে এর উপযুক্ত পাল্টা জবাব শত্রু পক্ষকে দেওয়া হবে।
অন্য দিকে আফগানিস্তানে তালিবান যোদ্ধাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। গত সাত দিনে দেশটির এক এক করে ১১টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিতে সমর্থ হয়েছে দলটির সদস্যরা।
প্রায় ২০ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হওয়ায় দ্রুতগতিতে ক্ষমতা গ্রহণের দিকে অগ্রসর হচ্ছে গোষ্ঠীটি। প্রতিদিনই নতুন নতুন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিচ্ছে সংগঠনটির যোদ্ধারা। উদ্ভূত এমন পরিস্থিতিতে আফগান সরকারকে দলটির সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিলেন ইইউর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান।
বিএসডি/এমএম