ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। রয়েছে ভিন্ন ঐতিহ্যও। সেই ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেই বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় হিফজুল কোরআন ও ক্বেরাত প্রতিযোগিতা। স্বতঃস্ফূর্ত মনে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের হাফেজ ক্বারীরাও। তার মধ্যেই একজন হলেন প্রতিভাবান আন্তর্জাতিক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানী।তিনি বাংলাদেশের কৃতি সন্তান। লাল সবুজের গৌরব। সুমিষ্ট কন্ঠের অধিকারী। তার কন্ঠে রয়েছে হৃদয় স্পর্শ করা আবেগ এবং সুরের অপূর্ব মূর্ছনা। তার অনন্য কণ্ঠস্বর তাকে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন সেমিনার অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি ১৯ মে ২০০৩ সালে রাজধানী ঢাকাতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বদরপুর গ্রামে। পিতা ড. সাইয়্যেদ মুতাওয়াক্কিল বিল্লাহ রব্বানী। মাতা সাইয়্যেদা নাইমা খাতুন। তাঁরা ৩ ভাই। সবার বড় তিনিই। মা-বাবার নয়নমনি। তাঁর শিক্ষার হাতেখড়ি শুরু হয় মা-বাবার থেকেই। অতঃপর তিনি বাংলাদেশের খ্যাতিমান হাফেজ উস্তাদুল কুর্রা ওয়াল হুফ্ফাজ শাইখ ক্বারী নাজমুল হাসান (দা: বা:) পরিচালিত তাহফিজুল কুরআন ও সুন্নাহ মাদ্রাসা ঢাকাতে পড়াশোনা করে ২০১৩ সালে কুরআনুল কারীম মুখস্ত সম্পন্ন করেছেন এবং ক্বারী ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর থেকেই তিনি জাতীয় পর্যায় সহ বিভিন্ন টেলিভিশন এবং সভা সেমিনারে প্রশংসনীয় কোরআন তেলাওয়াত করেন। এমনকি কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায়ও তিনি প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তাঁর সুমিষ্ট তেলাওয়াত শুনে শ্রোতারা মুগ্ধ হয়।
বর্তমানে তিনি আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে পরিবারসহ বসবাস করে। সেখানে মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শায়খ মুসতাজিবুর রহমান দা.বা. এর কাছে তিনি দশ ক্বেরাতের উপর অধ্যায়নরত আছেন। পাশাপাশি ওজনপার্ক জামে মসজিদ, কুইন্স, নিউইয়র্কে সফলতার সাথে খতিবের দায়িত্ব পালন করছেন।
পরিশেষে কোরআন তেলাওয়াত বিষয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মনে করি কোরআন তেলাওয়াত ইসলামি সাংস্কৃতিক বিপ্লবের একটি বিরাট অংশ। মানুষ বিনোদনের জন্য গান বাজনা শুনে থাকে। নোংরা সংস্কৃতির মোহে পড়ে । আমি আশাবাদী আগামী দিনে মুসলিম উম্মাহ আমাদের কোরআন শ্রবণ করবে। কোরআনের সুর ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে এটাই প্রত্যাশা।