আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভদ্মাদিমির পুতিনকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি বলেছেন, এখন যুদ্ধের সময় নয়। আর পুতিন জানান, তিনিও চান যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে। উজবেকিস্তানের সমরখন্দে দুই দিনব্যাপী সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তাঁরা এসব কথা বলেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এএফপির।
মোদিকে উদ্দেশ করে পুতিন বলেন, ইউক্রেনের সংঘাতের বিষয়ে আপনার অবস্থান ও উদ্বেগ আমি জানি। আমরা চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ শেষ হোক। সেখানে যা ঘটছে তা আমরা আপনাকে জানাব। এ সময় মোদি বলেন, আমাদের খাদ্য, জ্বালানি নিরাপত্তা ও সারের সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেন থেকে ভারতীয় ছাত্রদের সরিয়ে নিতে সহায়তা করায় বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়কেই ধন্যবাদ জানান মোদি। এর আগে সম্মেলনে বক্তব্যে এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মাঝে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন মোদি।
এদিকে, এসসিওকে ‘শক্তির নতুন কেন্দ্র’ উল্লেখ করে এর ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে ইতিবাচকভাবে বর্ণনা করেছেন পুতিন। সম্মেলনে ভাষণে তিনি বলেন, আমরা সারাবিশ্বের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য উন্মুক্ত। আমাদের নীতিতে কোনো স্বার্থপরতা নেই। আমরা আশা করি, অন্যরাও একই নীতি অনুযায়ী চলবে। এ সময় তিনি সুরক্ষাবাদ, অবৈধ নিষেধাজ্ঞা এবং অর্থনৈতিক স্বার্থপরতা বন্ধেরও আশা প্রকাশ করেন।
আর পশ্চিমা বৈশ্বিক প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সম্মেলনে তিনি আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানান। জিনপিং বলেন, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার উন্নয়নকে আরও ন্যায়সংগত ও যুক্তিসংগতের দিকে এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ সময় তিনি ‘জয়-পরাজয়ের খেলা’ এবং ব্লকের রাজনীতি পরিহার করতে সংস্থার সদস্যদের পরামর্শও দেন।
এদিকে, শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। এ সময় চীনের প্রেসিডেন্ট তুরস্কের নেতার উদ্দেশে বলেন, দুই পক্ষের উচিত রাজনৈতিক পারস্পরিক বিশ্বাস সুসংহত করা, একে অপরের মূল স্বার্থকে সম্মান করা এবং চীন-তুরস্কের কৌশলগত সহযোগিতামূলক সম্পর্কের ভিত্তিকে মজবুত করা। দেশটির উত্তর-পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলে মুসলিম সংখ্যালঘু উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের আন্তর্জাতিক সমালোচনায় আঙ্কারার সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্কে ছেদ পড়েছে। যদিও বৈঠকে জিনজিয়াং বা উইঘুরদের প্রসঙ্গে আলোচনা হয়নি।
যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন এরদোয়ান। শুক্রবার পুতিনের উপস্থিতিতে এসসিওর সংলাপে তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তুরস্ক। এ সময় খাদ্যশস্য সঠিক গন্তব্যে পৌঁছা নিয়ে এরদোয়ানও পুতিনের মতোই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তুরস্ককে সরাসরি যুদ্ধবিরতির আলোচনার জন্য পুতিনকে রাজি করাতে নিজের সুসম্পর্ককে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন তিনি।
রাশিয়া ও চীনের মধ্যে সম্পর্ককে বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেছে তাইওয়ান। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ‘কর্তৃত্ববাদের সম্প্রসারণ’ প্রতিরোধ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছে তাইপে।