আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি সব কর্মীর জন্য বাধ্যতামূলক করোনাভাইরাসের ‘গ্রিন পাস’ চালু করতে যাচ্ছে ইতালি। দেশটির সরকার স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নতুন একটি আদেশ জারি করেছে। যারা এই আদেশ লঙ্ঘন করবেন তারা কাজের সুযোগ পাবেন না। আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। খবর আল-জাজিরার।
করোনার প্রথম ঢেউয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল ইতালি। কিন্তু দেশটিতে এখন প্রকোপ অনেকটা কমে গেছে। প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি নেতৃত্বাধীন ইতালির জোট সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে, টিকা নিতে অনাগ্রহী অনেক মানুষকে টিকা নিতে বাধ্য করানোর পাশাপাশি করোনাভাইরাস সংক্রমণের শনাক্তের হার কমিয়ে আনার জন্য।
আগামী মাস থেকে চালু হতে যাওয়া ইতালির নতুন নিয়মের আওতায় গ্রিন পাস নিতে হলে সরকারি ও বেসরকারি সব খাতের কর্মীদের কাজ করার জন্য কোভিড টিকা নেওয়ার প্রমাণ (টিকা সনদ) দেখাতে হবে। এছাড়া দেখাতে হবে, সম্প্রতি করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়া অথবা ছয় মাসের মধ্যে করোনা থেকে সেরে ওঠার প্রমাণও।
গ্রিন পাস বিষয়টি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর দেশটির মন্ত্রীরা সাংবাদিকেরা বলেছেন, কোনো শ্রমিক যদি বৈধ স্বাস্থ্য সনদ দেখাতে ব্যর্থ হন, তাহলে তিনি কাজে যোগ দিতে পারবে না। তবে তাকে চাকরিচ্যুতও করা যাবে না। কেউ যদি নতুন নিময় না মেনে কাজে যান, তাহলে তাকে ৬০০ থেকে ১৫০০ ইউরো জরিমানা গুণতে হবে।
সরকারের নেওয়া নতুন এই পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরেনজা বলেছেন, ‘গ্রিস হলো স্বাধীনতার একটি দলিল, যেটা কর্মক্ষেত্রে আরও নিরাপদ ও সুরক্ষিত করবে। দ্বিতীয় কারণটি হলো, এতে করে আমাদের কোভিড টিকাদান কর্মসূচির গতি আরও বাড়বে।’
ইতালির নতুন এই নিয়মের কারণে দেশটির বেসরকারি খাতের এক কোটি ৪৭ এবং সরকারি খাতের ৩২ লাখ মানুষের জন্য গ্রিন পাস বাধ্যতামূলক হবে। অবশ্য দেশটির স্বাস্থ্যখাতের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের জন্য ইতোমধ্যে টিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া গ্রিন পাস নিয়ম চালু ছিল শুধু দেশটির স্কুলের শিক্ষক ও কর্মীদের জন্য। সংক্রমণে ইউরোপে যুক্তরাজ্যের পর দ্বিতীয় সর্বাধিক মৃত্যু দেখেছে ইতালি। দেশটিতে কোভিডে এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। তবে ইতালির ৭৪ শতাংশ অর্থাৎ ছয় কোটি মানুষ অন্তত টিকার এক ডোজ নিয়েছেন। এছাড়া ৬৮ শতাংশ মানুষ নিয়েছেন কোভিড টিকার পূর্ণ ডোজ।