আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা লক্ষ্য করে অব্যাহত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। প্রতিদিনই সেখানে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গাজার ফিলিস্তিনিদের মারতে দখলদার সেনারা এত বেশি বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে যে, হামলায় মৃত্যুর পর কয়েকজনের মরদেহ একেবারে গলে গেছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্স শনিবার (১১ জানুয়ারি) জানিয়েছে এমন ভয়াবহ তথ্য।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।
দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি বাহনিীর হামলায় নিহত হয়েছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। তবে নিহতের সংখ্যা যা দেখানো হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়েও অনেক বেশি বলে জানিয়েছে একটি গবেষণা প্রতিবেদন।
এমনকি গাজায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা বর্তমানে সামনে আসা সংখ্যার চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি বলেও জানানো হয়েছে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪১ শতাংশ কম রিপোর্ট করা হয়েছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় চলমান সংঘাতে ভূখণ্ডটির জনসংখ্যার ৩ শতাংশ মারা গেছে বলে শুক্রবার প্রকাশিত নতুন সমীক্ষায় বলা হয়েছে।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন (এলএসএইচটিএম)-এর গবেষকদের একটি স্বাধীন সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৪ হাজার ২৬০ জনের আঘাতজনিত মৃত্যু হয়েছে। যদিও গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই যুদ্ধে ৩৭ হাজার ৮৭৭ জনের নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল।
মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এই গবেষলার ফলাফলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, গাজার জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ চলমান এই সহিংসতার কারণে মারা গেছে। তাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই নারী, শিশু এবং বয়স্ক মানুষ।
আনাদোলু বলছে, গবেষকরা আঘাতজনিত আঘাতের মৃত্যুর সংখ্যা অনুমান করতে “ক্যাপচার-রিক্যাপচার অ্যানালাইসিস” নামে পরিচিত একটি পরিসংখ্যানগত পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন এবং তথ্যের উৎসগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ও হাসপাতালের মর্গের রেকর্ড, অনলাইন জরিপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত মৃত্যুর তথ্যও রয়েছে।
সমীক্ষা অনুসারে, আঘাতজনিত মৃত্যুর উল্লেখযোগ্য আন্ডার রিপোর্টিং গাজার স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর অবনতি এবং চলমান সহিংসতার মধ্যে নিহতের সংখ্যা গণনা করতে অক্ষমতাকেই সামনে তুলে ধরে।
আনুমানিক আন্ডার রিপোর্টিং হারের ওপর ভিত্তি করে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ট্রমাজনিত আঘাতের মৃত্যুর সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করা হয়, যা সেই সময়ে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রায় ৪২ হাজার বলে জানিয়েছিল।
সূত্র: আলজাজিরা, আনাদোলু