ধর্ম ডেস্ক:
গত রবিবার মধ্যরাতে রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। তাদের সহায়সম্পদ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন মুসলমান হিসেবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। যারা এমন কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করে জনসম্মুখে শাস্তি দেওয়া হোক। সে যে ধর্মের অনুসারী হোক না কেন। কারণ কোনো ধর্মই এমন ন্যক্কারজনক কাজের অনুমতি দেয় না। ধর্ম মানুষকে শান্তির পথ দেখায়। মানুষের অধিকারের কথা বলে। কাউকে ধ্বংস বা ক্ষতির সমর্থন করে না।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুবই কঠোরতার সঙ্গে বলেন, ‘জেনে রেখ, কেউ যদি কোনো (মুসলিম সমাজে অবস্থিত) অমুসলিমকে জুলুম করে বা তার অনুমতি ছাড়া তার কোনো বস্তু গ্রহণ করে তাহলে কাল কিয়ামতে আমি তার বিরুদ্ধে বাদী হব।’ আবু দাউদ।
বর্তমানে আমাদের দেশকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোনো একটি চক্র দিন দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করছে। তারা সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করছে।
অথচ সংখ্যালঘুরা আমাদের মতো এ দেশে সমান অধিকারপ্রাপ্য জাতিগোষ্ঠী। তাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ইসলাম আমাদের দিয়েছে। কখনই তাদের সঙ্গে মারামারি বা হানাহানি করা যাবে না। সম্প্রীতির সম্পর্ক নষ্ট করা যাবে না। ইসলাম কখনই এ অধিকার আমাদের দেয়নি।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কেউ কোনো চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমকে হত্যা করলে জান্নাতের ঘ্র্রাণও পাবে না, অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ ৪০ বছরের দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়।’ বুখারি।
কোনো সংখ্যালঘুর উপাসনালয়ে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া অমার্জনীয় অপরাধ। যারা এসব করবে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। কারণ কোরআনের আদেশ হচ্ছে কিছু লোককে দমন করে সব ধর্মের উপাসনালয় রক্ষা করা। যাতে সংখ্যালঘুর অধিকার ক্ষুণ্ণ না হয়।
এ প্রসঙ্গে কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ যদি মানব জাতির এক দলকে দিয়ে অন্য দলকে প্রতিহত না করতেন তাহলে বিধ্বস্ত হয়ে যেত খ্রিস্টান সংসারবিরাগীদের উপাসনালয়, গির্জা, ইহুদিদের উপাসনালয় এবং মসজিদ; যার মধ্যে আল্লাহর নাম বেশি স্মরণ করা হয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই ওই ব্যক্তিকে সাহায্য করেন যে তাকে সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।’ সুরা হজ, আয়াত ৪০।
লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।
বিএসডি/আইপি