নিজস্ব প্রতিবেদক:
সদ্য গঠিত নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রধানমন্ত্রীর ‘কিচেন কমিশন’ অভিহিত করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ইসি গঠন হলেই কি আর না হলেই কি? এই নির্বাচন কমিশন তো গঠিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে। তাছাড়া নির্বাচন তো করবেন ডিসি এসপিরা।
সোমবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে রিজভী এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকতে নতুন যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে সেটা তো প্রধানমন্ত্রীর কিচেন কমিশন। এর বাইরে তাদের তো কোনো ভূমিকা থাকবে না। কারণ ভোট তো তারা করবে না। ভোট করবে ডিসি-এসপিরা। যদিও নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তারা তো স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে পারবে না। সেখানে প্রশাসন ক্যাডারের সিনিয়রদের দিয়ে কমিশন হয়েছে। মূলত যাদের চিন্তা চেতনা আওয়ামী রঙে রঙিন তাদের দিয়েই কমিশন গঠন করা হয়েছে। সুতরাং সেটা হলো প্রধানমন্ত্রীর কিচেন কমিশন।’
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার তো ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় রয়েছে, যাদের কোনো জবাবদিহি নেই। সুতরাং জনগণ বাঁচলো কি মরলো সেদিকে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যে কারণে আজকে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত এবং স্বল্প আয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। দুঃসহ অবস্থা। মানুষ দম নিতে পারছে না। যেভাবে নিতনিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে তাতে মানুষের শ্বাসনালী টেনে ধরা হয়েছে। আজকে সাধারণ মানের খাবারের চালও ৬৫-৭০ টাকা। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় চিনি, বাচ্চাদের জন্য গুঁড়ো দুধ সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। পিয়াজ, মরিচ, ভোজ্যতেলসহ মানুষের একান্ত প্রয়োজনীয় খাবারের দাম বেড়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে যদি সত্যিকারের নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার ক্ষমতায় থাকতো এসব হতো না। আজকে বাজারে তো সব সরকারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। সব জায়গায় তাদের লোক লাগিয়ে রাখা হয়েছে যে, জনগণকে শোষণ ও লুট করো। আত্মসাৎ করো। জনগণের টাকা লুটের অংশ হিসেবে বাজারে সব নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এজন্য আওয়ামী সিন্ডিকেট দায়ী।’
জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতিহা পাঠ করেন রুহুল কবির রিজভী। এসময় জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব, সদস্য সচিব মো. আবদুর রহিম, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম মিঞা, জাকির হোসেন খান, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, জাহাঙ্গীর আলম সনেট, কবির উদ্দিন মাষ্টার, সাইফুল ইসলাম টুলু, কাজী কামাল উদ্দিন আহমেদ বাঁধন মিঞা, এমএ হান্নান মল্লিক, আমির হোসেন আমির, কামাল উদ্দিন চৌধুরী টিটু, তানভীর আহমেদ, মাহাবুব আলম সিকদার, অহিদ রানা, শাহিন উদ্দিন চৌধুরী স্বপন, শরিফুর রহমান রিপন, এডভোকেট মনির হোসেন মারুফ, ঢাকা মহানগর নেতা, মো. গিয়াসউদ্দিন, মঞ্জুর রহমান ভূঁইয়া ও সায়েম উদ্দিন সিয়াম, আবু কউসার, আল ইমরান, মহানগর নেতা মো. বাকীবিল্লা, এসএম অমিত চৌধুরী সুমন, সৈয়দ মাসুদুর রহমান, মো. ইসমাইল, মো. ফারুক হোসেন, সামছুর রহমান বুকারী, জাকির হোসেন, গোফরান উদ্দিনসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্যজীবী দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংশ্লিষ্টদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘দেশের বিশাল অংশ জলাভূমি। আমাদের পুষ্টির একটি অংশ সাধিত হয় মাছ দিয়ে। দেশের বিরাট একটি শ্রেণি মাছের চাষ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত। সুতরাং তাদেরকে জাতীয়তাবাদী শক্তির সাথে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজকে ৪৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।’
বিএসডি/ এলএল