দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সবার মতো চঞ্চল চৌধুরীর পরিবারেও চলছে উৎসবের আমেজ। এই উৎসবের আনন্দের মধ্যেই কাঁদলেন এই অভিনেতা। কেননা জন্মের পর থেকে এই প্রথম প্রথম বাবাকে ছাড়া এই উৎসব পালন করছেন তিনি। গত বছর বাবাকে হারিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাবার একটি ছবি শেয়ার করে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন এই অভিনেতা।
সেই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘কিছুটা সামর্থ্য হওয়ার পর থেকেই প্রতিবছর পূজায় সবার আগে মা–বাবার জন্য নতুন পোশাক কেনা আমার জন্য ছিল সবচেয়ে বড় প্রশান্তির, সবচেয়ে বড় আনন্দের অভ্যাস। এবারও নিজ হাতে সবার জন্য নতুন কাপড় কেনার তালিকা তৈরি করতে গিয়ে প্রথমেই বাবার নামটা লিখে ফেলেছি। হঠাৎ মনে হলো, আরে…বাবা তো নেই। চুপ করে বসে থাকলাম অনেকক্ষণ। চোখের জল কোনোভাবেই বন্ধ করতে পারছিলাম না।’
এই পূজায় বাবার জন্য কিছু কেনা না হলেও বাবার কিনে দেওয়া পোশাকগুলোর স্মৃতি তাঁকে আবেগপ্রবণ করেছে চঞ্চলকে। তিনি লিখেছেন, ‘বাবা বেঁচে থাকলে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতাম, প্রথম যে বছর আমি দুর্গাপূজায় তোমার জন্য পাঞ্জাবি কিনে দিয়েছিলাম, সেই নতুন পাঞ্জাবির ঘ্রাণটা তোমার কাছে কেমন লেগেছিল বাবা? শুদ্ধ (চঞ্চল চৌধুরীর ছেলে) কি পূজায় আমার কিনে দেওয়া নতুন শার্ট বা পাঞ্জাবিতে কোনো ঘ্রাণ খুঁজে পায়? যে ঘ্রাণ এখনো আমার নাকে, মুখে, সারা শরীরে লেপটে আছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাবা,তুমি ঐরকম একটা গন্ধ হয়ে আমৃত্যু আমার শরীরে মেখে থেকো। যেখানেই থাকো ভালো থেকো বাবা। এবার পূজাতেও হয়তো বাড়িতে গেলে গাড়ীর হর্ন শুনে,গেটের বাইরে এসে তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলবে,‘রাস্তায় কোন কষ্ট হয়নি তো বাবা???’’
শৈশবে একটা সময় অর্থনৈতিক টানাপোড়েন দেখতে হয়েছে চঞ্চল চৌধুরীকে। এই স্মৃতি স্মরণ করে তিনি লিখেছেন, ‘সারা বছর তেমন নতুন পোশাক আমাদের কপালে জুটত না। কঠিন দারিদ্র্যতার ভেতরেও পূজার সময় বাবা সাধ্যমতো চেষ্টা করতেন সব ভাইবোনকে নতুন কাপড় কিনে দেওয়ার। সারা বছরে একমাত্র এ পূজাতেই আমাদের সৌভাগ্য হতো নতুন পোশাক পরার।’
বিএসডি/ এফ এ