নিজস্ব প্রতিবেদক:
এক লাইনে প্রায় ২০টি টিকিট কাউন্টার। এর অধিকাংশই ফাঁকা। দুই একটি কাউন্টারে মাঝেমধ্যে ভিড় দেখা দিচ্ছে। টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশের পরও অনেকটা একই রকম চিত্র। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন, স্টল, ফুড স্টলগুলোও সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে সংশ্লিষ্টদের আশা, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই জমে উঠবে মেলা।
এবারই প্রথম বাণিজ্যমেলার স্থান হয়েছে রাজধানীর অদূরে পূর্বাচল উপশহরের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে নতুন স্থানটির দূরত্ব ১৪ কিলোমিটারের মতো।
গত ১ জানুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। শুরুর হিসেব করলে মাত্র ৩ দিন হলো, যে কারণে মেলার অনেক স্টল, প্যাভিলিয়ন এখনও প্রস্তুত হয়নি। সেই সঙ্গে রাজধানী থেকে মেলায় এখনও সাধারণ ক্রেতা, দর্শনার্থীরা সেভাবে যাওয়া শুরু করেননি। ফলে এখনও ফাঁকা মেলা প্রাঙ্গণ। তবে আগামী সপ্তাহে মেলা পুরোদমে জমে উঠবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে রাজধানী থেকে মেলাগামী সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে বেশ কিছু বাস চালু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন। কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণে যাওয়া আসার জন্য এ সেবা চালু করা হয়েছে। এ জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। প্রায় ১৪ কিলোমিটার এ পথ পাড়ি দিতে বিআরটিসি বাসের সময় লাগছে আধা ঘণ্টার মতো।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরা থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় সপরিবারে এসেছেন ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, জানতাম মেলা এখনও জমেনি, তবুও আজ ফ্রি থাকায় পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি। বেশিরভাগ প্যাভিলিয়ন, স্টল বেচা বিক্রি শুরু করলেও অনেকগুলো এখনও প্রস্তুত হয়নি। সেগুলোতে এখনও অবকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। মেলায় খুব বেশি মানুষের উপস্থিতি নেই। তবে সপ্তাহখানেক গেলে মেলা জমতে শুরু করবে। প্রথমে টিকিট কাউন্টারগুলো ফাঁকা দেখেই বুঝে গেছি মেলা জমেনি। তারপরও প্রথম দিকে মেলায় আসলাম ঘুরলাম, টুকিটাকি জিনিস কিনলাম। বড় জায়গা, অনেক স্পেস, অনেক স্টল তবুও এবার বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা বেশি বেশি মনে হচ্ছে।
এদিকে এসকে ক্রোকারিজ নামে একটি স্টলের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান বলেন, বাণিজ্যমেলা কেবল শুরু হয়েছে, এছাড়া রাজধানী থেকে দূরে এসে এবারই প্রথম বাণিজ্যমেলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এখনও ক্রেতা, দর্শনার্থীদের উপস্থিতি তেমনভাবে হচ্ছে না। এছাড়া অনেক স্টল, প্যাভিলিয়ন এখনও প্রস্তুত হয়নি। তাই আগামী সপ্তাহ থেকে মেলা জমে উঠবে বলে আশা করছি আমরা।
অন্যদিকে বাণিজ্যমেলা এখনও জমে না ওঠায় যাত্রী সংকটে ভুগছে বাসগুলো। তাই মেলা প্রাঙ্গণে আসতে বাসের টিকিট কেটে একজন যাত্রীকে কমপক্ষে ৩০ মিনিট বাসে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যাত্রী পরিপূর্ণ না হলে একটি বাসও ছাড়ছে না। সে কারণে মেলাগামী সাধারণ দর্শনার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে আসা দর্শনার্থীরা অভিযোগ জানিয়েছেন।
গত ১ জানুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে বাণিজ্যমেলা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবার মেলার প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা আর শিশুদের জন্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এবারই প্রথম স্থায়ী ভেন্যুতে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগে এ মেলা হতো রাজধানীর আগারগাঁওয়ে। মেলায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল ও ১৫টি ফুড স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিএসডি/ এলএল