নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ (উড়াল সড়কপথ) প্রায় ২ হাজার ৬৬৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
বুধবার আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। দুই বছরেরও বেশি সময় পর সশরীরের একনেক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা শনাক্তের পর থেকে আর সশরীরে একনেক বৈঠকে উপস্থিত হননি প্রধানমন্ত্রী। এতদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিতেন তিনি। কিন্তু আজকের বৈঠকে সশরীরেই উপস্থিত হন তিনি।
একনেক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীকে ফিরে পেলাম সশরীরে। এটা স্বস্তির বিষয়। কোভিডের সব শঙ্কা ভুলে গেছি এটাই তার প্রমাণ। এর আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি একনেক বৈঠকে সভাপতিত্ব করতেন। তবে তিনি আজকে সশরীরে উপস্থিত হলেন দুই বছর বেশি সময় পর এটা আমাদের জন্য একটা বড় স্বস্তির বিষয়।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প শেষপযর্ন্ত বাস্তবায়ন হয়ে গেলো। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা স্ট্রাগল ও চাপ নিয়ে একনেক সভায় খোলামেলা শেয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। জনগণ পাশে ছিল, জনগণের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু। দেশের ভেতরে বাইরে অনেক প্রতিকূলতা ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
এছাড়া বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে লাইন কেটে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকলে তা সবাইকে পরিশোধ করতে হবে। পাওনা না দিলে বিদ্যুৎ কেটে দিতে হবে। বিদ্যুৎ বিল সরকারি-বেসরকারি সবাইকে দিতে হবে। সবাইকে অবশ্যই বিল পরিশোধ করতে হবে।
প্রতিটি স্থলবন্দর আপগ্রেড করতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতে আধুনিক স্থাপনা ও সিস্টেম বসাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। গ্রামীণ সড়কের টেকসই উন্নয়নে নানা দিকে নজর দিতে হবে। নতুন সড়ক নির্মাণ প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (উড়াল সড়কপথ) মূল কাজ এখনও শুরু হয়নি। তবে ৬ জুন মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই ৪ বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ছে ৬৫১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এজন্য প্রথম সংশোধন করা হচ্ছে প্রকল্পটি। ফলে পৌনে ৫ বছরের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় যাচ্ছে প্রায় ৯ বছর।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর অনুমোদন দেয় একনেক। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। কিন্তু নানা কারণে প্রকল্পটির মূল কাজই শুরু হয়নি। এরই মধ্যে রাজস্ব খাতের কয়েকটি অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধিসহ ডলারের বিনিময় মূল্য পরিবর্তনের কারণে এটির প্রথম সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এশিয়ান হাইওয়ে এলাইনমেন্টের মধ্যে অবস্থিত প্রস্তাবিত ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০ জেলার সংযোগ স্থাপনকারী আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল-চন্দ্রা-করিডোরে যানজট অনেকটাই কমে যাবে।
বিএসডি/ এমআর