অনলাইন ডেস্ক
ঐতিহ্য সংরক্ষণে নদী অববাহিকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঐতিহ্যবাহী আহসান মঞ্জিল ও রূপলাল হাউস সংলগ্ন রাস্তা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আহসান মঞ্জিল একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। তার সামনে কীভাবে দখল অবস্থায় রয়েছে এবং বিআইডব্লিউটিএ সেখানে বিভিন্ন জেটি এবং বিভিন্ন ঘাট বানিয়ে সেখানে একটি অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। নদী থেকে স্থাপনার সৌন্দর্য দেখার সুযোগ আর নেই। এখন আমি এসেছি আমাদের ঐতিহ্যবাহী রূপলাল হাউজের সামনে। আগেও আমি রূপলাল হাউজের ভেতরে পরিদর্শন করেছি। আমরা এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন ও গণপূর্তকে চিঠি দিয়েছি, রূপলাল হাউজ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আমাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য। আজ আমি সামনের দিকটা পরিদর্শনে এলাম। আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে এখানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ঘাট দখল করা হয়েছে। যে সিঁড়ির পাশে আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি সেটিও রূপলাল হাউজের অংশ ছিল। কিন্তু এখন দখল অবস্থায় আছে। সবমিলিয়ে ঐতিহ্য উপভোগ এবং সংরক্ষণ করার কোনো সুযোগ দেখছি না। তারপরও আমরা চেষ্টা করব, যাতে আমরা এ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার করতে পারি, সংরক্ষণ করতে পারি এবং দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে পারি।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে আমরা লালকুঠি সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছি। লালকুঠির সামনে তারা (বিআইডব্লিউটিএ) যে লঞ্চঘাট করেছে তা এ রূপলাল হাউজ পর্যন্ত বিস্তৃত। আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি, কয়েক দফা তাদের সঙ্গে বসেছি। আমরা অচিরেই এগুলো অপসারণের কাজ হাতে নেব। রূপলাল হাউজের জমিগুলো কিছু গণপূর্তের কাছে রয়েছে, কিছু জেলা প্রশাসনের কাছে রয়েছে। আমরা চিঠি দিয়েছি। আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে এগুলো হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অপসারণে যাব। সামনে নদীর অববাহিকায় যে অবৈধ স্থাপনা আছে সেগুলো আমরা অপসারণ করে জনগণের জন্য সুন্দর, মনোরম ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করে তা উপভোগের জন্য খুলে দেব। মানুষ এ ঐতিহ্যবাহী নিদর্শনগুলো উপভোগ করতে পারবে এবং বহির্বিশ্বের মতো নদী থেকেও সেগুলো উপভোগ করতে পারবে মানুষ।
মেয়র শেখ তাপস বলেন, এ সড়কটা ৬ সারিতে প্রশস্ত করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। বছিলার পর আমাদের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকা যেখানে থেকে শুরু হয়েছে সেখান থেকে আমরা শুরু করছি। পুরো রাস্তাটা ৬ সারিতে উন্নীত করব। ২ সারি – ২ সারি হবে এক্সপ্রেসওয়ে আর ১ সারি- ১ সারি থাকবে সার্ভিস সড়ক বা সংযোগ সড়ক। আমরা নতুন যে পরিকল্পনা নিয়েছি তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব, যাতে করে অর্থায়নের ব্যবস্থা করে দেয়। এটি ৬ সারিতে উন্নীত করতে পারলে এ এলাকার পরিবেশটা অনেক উন্নত হবে।
এ সময় ডেঙ্গু সংক্রমণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) আমাদের রোগীর সংখ্যা ২৫ এর নিচে ছিল। গত পাঁচ দিন ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতিদিন ২০ এর ঘরে রোগী পেয়েছি। সুতরাং দক্ষিণ সিটিতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এর আগে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস মৎস্য ভবন মোড়ে পথচারী পারাপার সেতু (ফুট ওভার ব্রিজ), ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস), ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামবাগ আধুনিক নগর মার্কেটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২১ উপলক্ষে ধানমন্ডি হ্রদে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম, ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল, ধানমন্ডি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএসডি/এমএম