নিজস্ব প্রতিবেদক,
আর মাত্র এক দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। সেইসঙ্গে কোরবানির মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জামের কদর বেড়েছে। তাই স্থায়ী কামারের দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় বসেছে অস্থায়ী দোকান। দোকানগুলোতে অগ্রিম অর্ডার নেওয়া ছাড়াও বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে দা, বটি, ছুরি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন ধরালো সরঞ্জাম।
সোমবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর বনশ্রী, খিলগাঁও, বাসাবো, মালিবাগ, রামপুরাসহ নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই ব্যস্ততা বাড়ছে কামারের দোকানগুলোতে। প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি থাকে এ শিল্পের ব্যবসায়ীদের। এবারও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। প্রতিবারের মতো এবার মাংস কাটার সরঞ্জামাদি বেচা-বিক্রি নির্ভর করবে কোরবানির পশু বিক্রির ওপর। তাই ঈদের আগের রাতের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের শেষ দিন ও রাতে কোরবানির পশু বেশি কেনা-বেচা হয়। ফলে ওই দিন রাতেই দা, বটি, ছুরি, চাপাতি কিনতে ভিড় জমে। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে এক-দুই সপ্তাহে যে পরিমাণ বেচা-বিক্রি হয়, তার চেয়ে কেয়েকগুণ বেশি বিক্রি হয় ঈদের আগের দিন রাতে। ওই রাতের বেচা-বিক্রিতে লকডাউনের ক্ষতি কিছু পুষিয়ে নিতে চান ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পশু জবাইয়ের ছুরি আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায়। এছাড়া, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ৫০ থেকে ১৫০ টাকায়। চাকু আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। ভালো মানের বটি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায়। আর ওজন অনুযায়ী চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়।
কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার তিতাস রোডে সবুজ মিয়া বসেছেন ধারালো সরঞ্জামের অস্থায়ী দোকানে। তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর এখানে অস্থায়ী দোকান বসাই। আমরা সারা বছর এ সময়ের জন্য অপেক্ষায় থাকি। ঈদের আগের এক সপ্তাহ ভালো বেচা-বিক্রি হয়। দামও ভালো পাওয়া যায়। তবে করোনার কারণে সারা বছর ভালো ব্যবসা হয়নি। তাই ঈদের অগের দিন ও রাতের অপেক্ষায় আছি। ভালো বেচা-বিক্রি হলে লকডাউনের ক্ষতি কিছুটা পোষানো সম্ভব হবে।’
এদিকে, খিলগাঁও তালতলা এলাকা থেকে অশিত কর্মকার বলেন, ‘ঈদে কোরবানির পশু যত বেশি বিক্রি হবে, তত বেশি আমাদের বেচা-বিক্রি হবে। প্রতি বছর এ ব্যবসায় অনেকটা কোরবানির পশু বিক্রির ওপর নির্ভরশীল। তবে করোনার কারণে একেবারেই বেচা-বিক্রি নেই বলেই চলে।’
রামপুরার পূর্ব হাজীপাড়ার বৌউবাজার এলাকায় চাপাতি ও ছুরি কিনতে কামারের দোকানে এসেছেন আসলাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘এবার মাংস কাটা ও চামড়া ছড়ানোর সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। ঈদের কারণে বাধ্য হয়ে বেশি দামে সরঞ্জাম কিনতে হচ্ছে।’
বিএসডি/এমএম