মৃত্যু, হাহাকার, দমবন্ধ করা লকডাউন…করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কায় গত বছর অনেকটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল ইতালি। করোনা মানুষের জীবন যেমন নিয়েছে, কেড়ে নিয়েছে ইতালিবাসীর মুখের হাসিও। মানুষের মুখে আবার হাসি ফেরানোর উপলক্ষ হিসেবে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপকে বেছে নেওয়ার কথা টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বলেছিলেন ইতালির কোচ রবার্তো মানচিনি আর তাঁর শিষ্যরা।
মানুষের মুখে হাসি ফেরানোর সেই কাজ ইউরোর প্রথম দিনেই করতে পেরেছেন চিরো ইম্মোবিলেরা। রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে কাল দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়ে তুরস্ককে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইতালি। এই জয়ের পর ইতালির খেলোয়াড়দের কণ্ঠে গত বছর করোনাভাইরাস–ঝড়ের পর মানুষের মনে স্বস্তি ফেরাতে পারার আনন্দসংগীত।
ইতালির প্রথম গোলটি ছিল তুরস্কের দেমিরালের করা আত্মঘাতী। দ্বিতীয় গোলটি করেছেন ইম্মোবিলে। তৃতীয় ও শেষ গোলটি করেছেন লরেনৎসো ইনসিনিয়ে। ম্যাচ শেষে ইতালির টেলিভিশন আরএআই স্পোর্তকে ইম্মোবিলে বলেছেন, ‘এত দিন ধরে যা কিছু হয়েছে, যে ঝড় আমাদের ওপর দিয়ে গেছে, এসবের পর সমর্থকদের উচ্ছ্বাস করতে দেখাটা ছিল অসাধারণ এক ব্যাপার। ভয়ংকর এই মহামারি কাটিয়ে লম্বা সময় পর আমরা আবার একত্র হয়েছি।’
মানুষের মুখে হাসি ফেরানোর কথা বলার পর ম্যাচ নিয়ে বলেছেন ইম্মোবিলে। তুরস্কের বিপক্ষে এমন এক জয়ের রহস্য জানিয়েছেন লাৎসিও স্ট্রাইকার, ‘আমরা অনেক ধৈর্য দেখিয়েছি। তুরস্ক শক্তিশালী একটি দল এবং অনেক বড় দলকেই সমস্যায় ফেলেছে তারা। বল ডান-বাঁয়ে ঘুরিয়ে প্রথমার্ধে আমরা তাদের ক্লান্ত করার চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি তাদের এলোমেলো করে দিতে।’
সহজ জয়ে পেলেও তুরস্কের বিপক্ষে দলের একটি দুর্বলতাও ধরা পড়েছে ইম্মোবিলের চোখে, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমরা বারবারই তাদের দেয়ালে বল মেরেছি। বিশেষ করে আমরা বাতাসে খুব একটা ভালো করতে পারিনি। বিরতির পর তুরস্কের খেলোয়াড়েরা একটু বেশিই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আর (৫৩ মিনিটে) প্রথম গোলটি খাওয়ার পর আঁটসাঁট অবস্থা থেকে তাদের একটু ছড়িয়ে–ছিটিয়ে যেতে হয়। এরপরই আমরা নিজেদের মানটা দেখাতে পেরেছি।’
মাঠটি রোমের আরেক দল এএস রোমার সঙ্গে ভাগাভাগি করে লাৎসিও। সেদিক থেকে ইম্মোবিলের ইউরো অভিষেকটা হয়েছে নিজের মাঠে। সে বিষয়েও কথা বলেছেন লাৎসিওর স্ট্রাইকার, ‘ইউরো অভিষেকে নিজের মাঠে গোল পাওয়ার চেয়ে ভালো কিছু আর হতে পারে না।’