নিজস্ব প্রতিবেদক,
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারিতে ঊর্দ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে দেশে বন্ধ হয়ে যায় টিকার দ্বিতীয়
ডোজের কার্যক্রম। টিকার সংকট দেখা দেয়ায় টিকার নিবন্ধনও বন্ধ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বিভিন্ন দেশ
থেকে টিকা আনার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। কাটছে টিকার সংকট।
এবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিনের ১০ লাখ ডোজ এ মাসে আসছে বলে জানিয়েছেন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, এই টিকা বাংলাদেশ পাবে কোভ্যাক্সের আওতায়। এছাড়া ভারতের
সেরাম ইনস্টিটিউট থেকেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার চালান আসার কথা রয়েছে অগাস্টে। কোভ্যাক্স
আমাদের জানিয়েছে, জুলাই মাসে ১০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসবে। আর
সেরাম ইনস্টিটিউটের স্থানীয় প্রতিনিধি আমাদের জানিয়েছে, অগাস্ট মাস থেকে আমাদের টিকা
দিতে থাকবে।”
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি
ডোজ কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭
ফেব্রæয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়।
কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউট দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সঙ্কটে পড়ে
বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। যারা প্রথম
ডোজ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যায়নি।
এ পরিস্থিতিতে সরকার চীনা টিকা কেনার উদ্যোগ নিলেও যারা প্রথম ডোজে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা
নিয়েছেন, তাদের জন্য ওই টিকার বিকল্প নেই। গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে
আব্দুল মোমেন জানিয়েছিলেন, কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় ‘শিগগিরই’ ১০ লাখ ৮০০ ডোজ
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বাংলাদেশ পাচ্ছে। সেই টিকাই জুলাই মাসে হাতে পাওয়ার সম্ভাবনার কথা এখন
জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। কোভ্যাক্স থেকে ৬ কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে
বাংলাদেশের। এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনকেটের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এবং মডার্নার তৈরি ২৫
লাখ ডোজ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কবে আসবে, তার দিনক্ষণ এখনো
চূড়ান্ত হয়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলছেন, নতুন করে টিকা আসা শুরু করলে দ্বিতীয় ডোজ
নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে বলে তিনি মনে করছেন না। যে টিকা আসবে, তাতে যারা প্রথম
নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন, তারা সবাই টিকা পাবেন। এটা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ
দেখছি না।”
এ বছরই আসছে ১০ কোটি ডোজ টিকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে এ বছরই ১০ কোটি
ডোজ টিকা দেশে আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি
বলেছেন, টিকা নিয়ে আমাদের সংকটের দিন শেষ। জাহিদ মালেক বলেন, টিকা পাওয়ার অনেকগুলো সোর্স
আমাদের আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো কোভ্যাক্স। যুক্তরাষ্ট্র কোভ্যাক্সের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে
দিচ্ছে। আগস্ট মাসে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকেও টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরকম বিভিন্ন
সোর্স থেকেই আমরা ১০ কোটি ডোজ টিকা পাব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী বছর জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি ডোজ টিকা আসবে। তাদের
একটি টিকা একজনকেই দেওয়া হবে। তাহলে তাদের টিকাই আমরা সাত কোটি মানুষকে দিতে পারব।
পাওয়া গেলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগস্টে ১৫ লাখ টিকা আসবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অ্যাস্ট্রাজেনেকার
টিকার দ্বিতীয় ডোজ যারা পাননি তাদের এই টিকা দেওয়া হবে। জাহিদ মালেক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের
আগস্ট মাস থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে, এমন ইঙ্গিত পেয়েছি। আমরা আশা করি, সময় মতো
টিকা পেয়ে যাব। যারা সেকেন্ড ডোজের অপেক্ষায় আছে, তারা আবার টিকা নিতে পারবে। দ্বিতীয়
ডোজ যাদের আটকে আছে, তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এই টিকা দেবে।
ঢাকা/ এস আই/ এস এ