জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
দলের নেতাকে মারধরের অভিযোগ এনে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার বিচার চেয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী দিনে এ দাবি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, কাদের মির্জা বিভিন্নভাবে সারা বাংলাদেশে বিতর্কিত। তার ভাইয়ের (ওবায়দুল কাদের) কাছে কতটুকু বিতর্কিত আমি জানি না। দলের কাছে কতটুকু বিতর্কিত আমি জানি না। কিন্তু কোম্পানীগঞ্জসহ সারা বাংলাদেশে তিনি অবাঞ্ছিত মানুষে পরিণত হয়েছেন।
রাঙ্গা বলেন, তিনি (কাদের মির্জা) কখন, কাকে কী বলছেন, আমি জানি না। জানি তিনি একটি দলের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রধানমন্ত্রী সেই দলের সভাপতি। আমরাও বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসাবে তাকে সম্মান করি। তিনি সবসময় ন্যায়বিচার করেন, আমরা তা-ই মনে করি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী না থাকার কারণে আমরা আপনার (স্পিকার) মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ন্যায়বিচার ও তার সুচিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান করছি।
এ ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়নি বলেও জানান তিনি। রাঙ্গা বলেন, বিগত নির্বাচনে অনেকগুলো আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্কের খাতিরে নির্বাচন করিনি। অনুরূপভাবে আমাদের অনেক আসনেও আওয়ামী লীগ কোন প্রার্থী দেয়নি। সুসম্পর্কটা যাতে ঠিক থাকে, সেই দৃষ্টি আমাদের সবসময় ছিল। আমাদের প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জীবিত থাকাকালে আমাদের সে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, স্বপন খুবই নিরীহ মানুষ। আমাদের কথার ভিত্তিতে আসনটি (নোয়াখালী-৫) তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করেছেন।
ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর বিশেষ আইনের মেয়াদ বাড়ানোর বিলের সংশোধনীর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে কোম্পানীগঞ্জের ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিচারের দাবি করেন জাপার আরেক সংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, মোঘল সম্রাটের সময় যখন কেউ ন্যায় বিচার পেতো না, তখন লাল কেল্লায় ঘণ্টা বাজাতো। আজ আমরা ঘণ্টা বাজাচ্ছি সংসদে। মাঝখানে অনেকগুলো ইনস্টিটিউশন নষ্ট হয়ে গেছে। সংসদকেই ন্যায়বিচার করতে হবে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক স্বপনকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে। দলটির নেতারা অভিযোগ করেন, ওই দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জাপা নেতা স্বপনকে বসুরহাট বাজারের কালামিয়া ম্যানশন নামের একটি বিপণীবিতানের সামনে থেকে কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা তুলে নিয়ে যান।
এরপর রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পৌরসভা ভবনের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে তাকে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন চালানো হয় বলে পরিবার অভিযোগ করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবদুল লতিফকে ডেকে পাঠিয়ে তার কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।