আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে এক দিনে ঠিক কতজনকে নিরাপদে উদ্ধার করে আনা হবে তা ওই দিনের পরিবেশ ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বলে সাফ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার মতে, সংশ্লিষ্ট দিনের পরিবেশ ও নিরাপত্তা জনিত পরিস্থিতির কারণে আফগান ভূখণ্ড থেকে বের করা মানুষের সংখ্যা প্রতিদিন এক থাকবে না।
রবিবার (২২ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে মন্তব্যটি করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট। এ সময় তালেবান যোদ্ধাদের হামলার আতঙ্কে দেশ ত্যাগে ইচ্ছুক লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে কাবুল থেকে এই উদ্ধার প্রক্রিয়ায় গতি আনার ঘোষণাও দেন জো বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যে সব মার্কিন নাগরিক এখনই দেশে (যুক্তরাষ্ট্রে) ফিরতে চায়, তারা সবাই ফিরবেন। এমনকি আমরা আমাদের আফগান মিত্র এবং সংকটে থাকা অন্যান্যদের সরিয়ে আনার জন্যও কাজ করছি।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, কাবুল থেকে কোনো বিমানই এখন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে আসছে না। এর পরিবর্তে আমাদের সব বিমান প্রথমে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের সামরিক ঘাঁটিতে অবতরণ করছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন এমন লোকজনের ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
গত জুলাই মাস থেকে প্রায় ৩৩ হাজার মানুষকে আফগান ভূমি থেকে সরিয়ে মার্কিন ভূখণ্ডে আনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জো বাইডেন।
এ দিকে রবিবার সকালে হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কাবুল থেকে সাত হাজার ৪০০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। অন্য দিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩৬ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ১১ হাজারের বেশি। এমনকি আফগানিস্তান ত্যাগের জন্য এখনো হাজার হাজার মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন বলেও জানানো হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছিলেন, আমাদের কর্মকর্তারা কাবুল ‘বিমানবন্দরে অবিশ্বাস্য রকমের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির’ সম্মুখীন হচ্ছেন। তালেবান যোদ্ধারা এক সপ্তাহ আগে আফগানিস্তানের দখল নিয়ে নিয়েছে।
‘ফক্স নিউজ সানডে’ শো’তে এই বিষয়ে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন। সেখানে তিনি বলেন, শেষ দফায় উদ্ধার করা মার্কিন ও আফগানদের মোট ৬০টি বিমানে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন।
অপর দিকে বহু আমেরিকান এবং আফগান কাবুল ত্যাগের পর এখন নিরাপদ আশ্রয়স্থলগুলোতে অবস্থান করছেন। এবার মূলত তাদের সরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের ৬টি বেসামরিক এয়ারলাইন্সের মোট ১৮টি যাত্রীবাহী জেট ব্যবহারের ব্যবস্থা করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের গত ৩০ বছরের ইতিহাসে সামরিক বাহিনীকে সহায়তার জন্য তৃতীয়বারের মতো বেসামরিক বিমান ব্যবহারের ব্যবস্থা করল মার্কিন প্রশাসন।
বিএসডি/এমএম