বিনোদন ডেস্ক
হিন্দি ও মারাঠি সিনেমার দুনিয়ায় জনপ্রিয় অভিনেতার নাম নানা পাটেকর। শুধু রুপালি পর্দায় নন, তিনি দেশের জন্য সত্যিকারের এক যোদ্ধাও বটে। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে সীমান্তে দাঁড়িয়ে ভারতের জন্য কাজ করেছিলেন অভিনেতা।
১৯৫১ সালে জন্ম নেওয়া নানা পাটেকরের সিনেমায় যাত্রা শুরু ১৯৭৮ সালে ‘গমন’ ছবির মাধ্যমে। ‘পরিন্দা’, ‘প্রহার’, ‘অঙ্গার’, ‘সালাম বম্বে’, ‘তিরঙ্গা’-র মতো একাধিক ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে ৯০-এর দশকে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেতা।
তিনবার জাতীয় পুরস্কার জেতা এই অভিনেতা দেশপ্রেমে বিশ্বাসী। আর তারই এক নজির রেখে গেছেন কার্গিল যুদ্ধে অংশ নিয়ে।
‘প্রহার’ সিনেমার প্রস্তুতির সময় তিনি তিন বছর ধরে কঠোর ট্রেনিং নেন মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রির কাছে। এই অভিজ্ঞতা তার মনে গভীর দেশপ্রেম তৈরি কর। এরপর যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঠিক করেন, বাস্তবেও দেশের পাশে দাঁড়াবেন।
সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও, শুরুতে সেনা কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। তবে হাল ছাড়েননি নানা। তিনি তখনকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজকে ফোন করেন। নিজে প্রশিক্ষণের কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী অবাক হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কবে যেতে চাও?”
আগস্ট ১৯৯৯-এ ভারতীয় সেনার সম্মানসূচক ক্যাপ্টেন হিসেবে নানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ড্রাস, কুপওয়াড়া, বারামুলা, সোপোর এবং মুঘলপুরার মতো উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় সেনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সীমান্তে টহল দেন তিনি।
সামরিক হাসপাতালে সাহায্যও করেন। নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে একবার নানা বলেন, “শ্রীনগরে যাওয়ার সময় ওজন ছিল ৭৬ কেজি, ফিরে এলাম ৫৬ কেজি হয়ে।”
পরবর্তীকালে তাকে ক্যাপ্টেন থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে বসানো হয়। আবার ফিরে আসেন সিনেমায় এবং উপহার দেন একের পর এক সফল ছবি।
যুদ্ধক্ষেত্রে তার অবদানের পাশাপাশি তিনি খরা-পীড়িত কৃষকদের সাহায্য করতে গড়ে তোলেন ‘নাম ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও।