আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তান ও তুরস্ক এক যৌথ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর ও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। ইস্তানবুলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠকে এই আলোচনা হয়।
সোমবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
এর আগে দুই দিনের সরকারি সফরে তুরস্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ। তার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির ও মন্ত্রিসভার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। চার-দেশীয় আঞ্চলিক সফরের অংশ হিসেবে প্রথমে তুরস্কে গেছেন শেহবাজ ও তার সফরসঙ্গীরা।
সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় পাকিস্তানের প্রতি নিরলস সমর্থন দেওয়ার জন্য রোববার অনুষ্ঠিত বৈঠকে শেহবাজ তুরস্ক সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “তুরস্কের নীতিগত অবস্থান এবং তাদের জনগণের অকুণ্ঠ সহানুভূতি পাকিস্তানের জন্য এক বিরাট শক্তির উৎস।”
শেহবাজ আরও বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাহসিকতা, ত্যাগের মানসিকতা এবং জনগণের দেশপ্রেম, “মারকাহ-ই-হক” ও “অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস”-এ পাকিস্তানের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক পর্যালোচনা করেন এবং একে আরও এগিয়ে নেওয়ার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন। বিশেষভাবে কাশ্মির ইস্যুতে পারস্পরিক নীতিগত সমর্থনের কথাও উঠে আসে। তারা আঞ্চলিক শান্তি এবং দুই দেশের জনগণের সম্মিলিত উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারও করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, অবকাঠামো এবং কৃষি খাত—এই পাঁচটি খাতে তুরস্কের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া বৈঠকে শুধু দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়। গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিয়ে তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও বাধাহীনভাবে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর দাবি জানান।
পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সৈয়দ তারিক ফতেমি এবং তুরস্কে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ড. ইউসুফ জুনেইদ।
পরে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ ও তার প্রতিনিধি দলের সম্মানে এক নৈশভোজের আয়োজন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজের দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক দুই দেশের ঐতিহাসিক, গভীর ও ভাইয়ের মতো সম্পর্ককে পুনরায় দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত করছে। এই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ ও সম্মিলিত উন্নয়নের স্বপ্ন থেকে।”