নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ খাতে ডিজিটাল আর্থিক সেবা (ডিএফএস) ও স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি গৃহায়ন ঋণ সুবিধা দিতে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্প নথিতে স্বাক্ষর করেছে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ)।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি নিজ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমআরএ’র এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও আইএফসি’র দক্ষিণ এশিয়ার ম্যানেজার (এফআইজি আপস্ট্রিম এবং অ্যাডভাইজরি) মেহদি চারকই ‘বাংলাদেশ মাইক্রোফাইন্যান্স সেক্টর ডেভলপমেন্ট’ প্রকল্পে সই করেন। অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও অন্যান্য কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং আইএফসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো—ক্ষুদ্র অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানসমূহের ঋণ কার্যক্রমকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় রূপান্তরে সহায়তা করা এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে উন্নতমানের আবাসন সুবিধার জন্য একটি নীতি পরিবেশ গড়ে তোলা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এমআরএর অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ডিজিটাল আর্থিক সেবা ও হাউজিং মাইক্রোফাইন্যান্স সংক্রান্ত নীতিমালা, রোডম্যাপ ও নির্দেশিকা প্রণয়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
২০২৩ সালে এমআরএ ও আইএফসি ‘মাইক্রোফাইন্যান্স সেক্টর ডেভলপমেন্ট ডাইয়াগোনোস্টিক: ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড দ্য অফারিং অব ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যান্ড মাইক্রো হাউজিং’ শীর্ষক একটি যৌথ গবেষণা পরিচালনা করে। এই গবেষণার প্রাপ্ত সুপারিশ ও বিশ্লেষণ এই প্রকল্পের রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।
আইএফসির দক্ষিণ এশিয়ার ম্যানেজার (এফআইজি আপস্ট্রিম এবং অ্যাডভাইজরি) মি. মেহদি চারকই বলেন, এই যৌথ প্রয়াস বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা ও স্থানীয় বাস্তবতার এক অনন্য সংমিশ্রণ, যা প্রান্তিক পর্যায়ে বিশেষ করে নারীদের জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও জীবনমান উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।
এমআরএর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ খাতকে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থার পথে এগিয়ে নিতে আজ এমআরএ ও আইএফসির মধ্যে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তিটি এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে এমআরএ সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন, পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে সহায়তা এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল এ খাত পর্যবেক্ষণের জন্য অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কার্যকর ও দূরদর্শী ভূমিকা পালনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
এমআরএর মানবসম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে এমআরএ কর্মকর্তাদের জন্য ডিজিটাল ম্যাচিউরিটি টুল বিষয়ক কর্মশালা, এক্সপোজার ভিজিট, এবং ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও ডিজিটাল ফাইনান্সিয়াল লিটারেসি সংক্রান্ত কর্মশালা আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি, হাউজিং মাইক্রোফাইন্যান্স বিষয়েও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে। এ সব কার্যক্রমের মাধ্যমে ডিজিটাল রূপান্তর ও হাউজিং মাইক্রোফাইন্যান্স খাতে প্রণয়নযোগ্য নীতিমালা ও পর্যবেক্ষণ কাঠামো ডিজাইন ও উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পটির সময়সীমা ১৮ (আঠারো) মাস ধরা হয়েছে । প্রকল্পের মোট আনুমানিক বাজেট নির্ধারিত হয়েছে সাড়ে তিন লাখ মার্কিন ডলার।