ডেস্ক রিপোর্ট
সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনলাইনেই নয়া সেমিস্টারের একাডেমিক কার্যক্রম চলছে। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের চলতি সেমিস্টারের ফি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে গবি প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সব ছাত্র-ছাত্রীদের চলতি সেমিস্টার ফি শিডিউল মোতাবেক প্রদানের নির্দেশ দেয়া হলো। এ শিডিউল মোতাবেক সেমিস্টার ফি জমা না দিলে তাদেরকে নির্ধারিত হারে জরিমানা দিয়ে সেমিস্টার ফি জমা দিতে হবে৷
তিনি আরো বলেন, কোনো অবস্থায় আংশিক সেমিস্টার ফি জমা নেয়া হবে না এবং জরিমানা মওকুফের আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
এ বিজ্ঞপ্তিতে দু:খ প্রকাশ করে গবির রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের ছাত্র, গবি ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন ‘গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পরিষদ’ নামক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন। পাঠকদের জন্য তার লেখাটি তুলে ধরা হলো—
শিক্ষা এখন আমার জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কোভিড ১৯ এর কারণে বিশ্বে অনেক বড় পরিবর্তন ঘটেছে। মানুষের ব্যাক্তি জীবনে এবং পারিবারিক আর্থিক অবস্থার অনেক বিপর্যয় নেমেছে। পেট চালাতে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা ছেড়ে কর্মমুখী হয়ে গেছে। কেউ দোকান চালাচ্ছে, কেউ দিনে এনে দিনে খাচ্ছে। উবার, পাঠাও, ফুড পান্ডা ডেলিভারি – এ ধরনের কাজও করছে। করোনায় মৃত্যুর হার এখন ৭%। পূর্বের থেকে অনেকখানি কমে এসছে। বেশ স্বাভাবিক। কিন্তু এর মানে কি একই সাথে আর্থিক অবস্থারও উন্নয়ন ঘটেছে? আপনারা যেভাবে ভাবছেন করোনা কমে গেছে। ভ্যাকসিন নিয়ে আর করোনা সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় আমি কোটিপতি হয়ে গেছি!
বাংলাদেশে কাজের মধ্যে ছিলেন ৬ কোটি ৮ লাখ মানুষ। করোনার আগে বেকার সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ।
২০২০ সালে এপ্রিল জুলাই সময়ে বেকারত্ব বেড়েছে ১০ গুন (বিবিএস)। তরুণদের মধ্যে ২৫% বেকার (আইএলও)। বেকারত্বের হার ২ মিনিটে ভ্যাকসিন দিয়ে কমে যাবে না।
আমি সেমিস্টার ফি মওকুফ বা কমাতে বলছি না। আমরা জানি—প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পরিচর্চার জন্যে অর্থের প্রয়োজন। কোভিড ১৯ এর প্রভাবের পরিবর্তনের উপর লক্ষ রেখে এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে কিস্তিতে সেমিস্টার ফি পরিশোধ করার নিয়ম অব্যাহত রাখা হোক। বিশ্বাস করেন ভ্যাকসিন নিলেই আমার ফ্যামিলির আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে না। আমাকে কদিন সময় দেন আমি আস্তে আস্তে আপনার সব টাকা দিয়ে দিবো। জরিমানা যোগ করে আমার উপর আরো চাপ বাড়াবেন না।
আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকদিন ধরে পড়ছি। আমার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মানবিক না হলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা আমাদের হৃদয়ে বাস করবে কিনা সন্দিহান! এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীদের মনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বিরুপ মনোভাবের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফল আসবে বলে আমার মনে হয় না। যে বিশ্ববিদ্যালয় নিজের শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ আরো কঠিন করে দেয় আমি তো চাইবো না আমার ভাই সেইখানে পড়ুক। আমি বলতে আমি আমাকে বুঝাচ্ছি না আমরা অনেকজন কারণ এটা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন কষাইখানা না মনে হয়।
সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা করা হোক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালোবাসতে চাই। জ্ঞান চর্চা করতে চাই। আমার সঙ্গে সহমত হলে শেয়ার করে প্রশাসনকে জানার সুযোগ করে দিবেন।
বিএসডি/এমএম