আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা ইস্যুতে সম্পূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি না হলেও অনেকখানি ঘুরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার তিনি বলেছেন, গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে বিতাড়িত করা হবে না।
বুধবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিসে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকের আগে এক যৌথ ব্রিফিংয়ে অংশ নেন তারা। ব্রিফিংয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার এক সাংবাদিক তাকে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ব্যাপারে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চান।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “(গাজা থেকে) কোনো ফিলিস্তিনিকে কেউ বিতাড়িত করছে না এবং এমন পরিকল্পনা নেই।”
প্রসঙ্গত, গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের এক সপ্তাহ পরই ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে যুক্তরাষ্ট্র গাজার মালিকানা পেতে চায়। তিনি বলেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকাকে একটি আধুনিক শহর এবং বাণিজ্যিক ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে গাজায় যেসব ফিলিস্তিনি বসবাস করছেন, তাদেরকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করা হবে বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
গত ০৯ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে এক ব্রিফিংয়ে এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছিলেন, ““আমি গাজা উপত্যকা ক্রয় এবং তার মালিকানার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। উপত্যকাটি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বর্তমানে সেটি বসবাসের অযোগ্য। বর্তমানে সেখানে যারা আছেন, তারা ব্যাপকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।”
“কিন্তু আমরা এই ভূখণ্ডটিকে খুব সুন্দর এবং উন্নতভাবে গড়ে তুলতে পারি। অন্যান্য দেশ যদি এ কার্যক্রমে অংশ নিতে চায়, আমরা তাদেরও স্বাগত জানাব। এটা খুবই সুন্দর একটি শহর হবে এবং সারা পৃথিবী থেকে লোকজন এখানে বসবাস করতে আসবে।”
গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের অন্য জায়গায় স্থানান্তরের ইঙ্গিতও দিয়ে তিনি বলেছিলেন, “(গাজায় বসবাসরত) ফিলিস্তিনিদের প্রতিও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তারা যেন নিরাপত্তাপূর্ণ পরিবেশে শান্তির সঙ্গে সবার সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা তাদেরকে আমাদের দিতে হবে। তাদের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে তারা হত্যার শিকার হবে না। এই মুহূর্তে তারা যেখানে বসবাস করছে, সেটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং অনিরাপদ জায়গা।”
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিল ইসরায়েলের কট্টরপন্থি রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলো; কিন্তু সম্প্রতি তারা অবস্থান পরিবর্তন করায় ট্রাম্পও আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।
ইসরায়েলের যেসব রাজনীতিবিদ গাজা দখলের জন্য সবচেয়ে উৎসাহী ছিলেন, তাদের মধ্যে দেশটির অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ অন্যতম। গত রোববার ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবে দেশটির অভিবাসন বিষয়ক কর্তৃপক্ষের নতুন একটি কার্যালয় উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন স্মোতরিচ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, “প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা ২০ লাখ নাৎসীকে (গাজার ফিলিস্তিনি) বেড়ার বাইরে ছেড়ে দিতে পারি না।”
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি