গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার টেংরা গ্রামে করোনাভাইরাসের টিকা বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার মুলাইদের রঙ্গিলা বাজার এলাকায় টাকার বিনিময়ে টিকা দেওয়ার সময় ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতদের কাছে সিনোভ্যাক্সের অর্ধপূর্ণ ৩টি ও খালি ৪টি ভায়াল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটেছে।
আটক ২ জনের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) গার্মেন্টস ঐক্য ফোরামের শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি। তিনি উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। অপরজন সুলতানা পারভীন (১৯)। তিনি একই উপজেলার মাওনা বাজার এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।
এলাকাবাসীর সহায়তায় জাহাঙ্গীর ও সুলতানাকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে আজ মধ্যরাতে একটি মামলা করেছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, তাদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন ধরেই জাহাঙ্গীর রঙ্গিলা বাজার এলাকার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিয়ে করোনার টিকাকার্ড সংগ্রহ করেন। পরে গতকাল দুপুর থেকে রঙ্গিলা বাজার এলাকায় জাহাঙ্গীরের সংগঠনের অফিসে বসে টিকাকার্ড দেওয়া মানুষদের টিকা দেওয়া শুরু করেন।
ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ‘এলাকাবাসীর সহায়তায় অভিযুক্তদেরকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং আজ আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’
অপরদিকে, গতকাল রাতে টাকার বিনিময়ে টিকা নেওয়ার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়া ভিডিও ফুটেজ ও অডিওবার্তা মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে, তেলিহাটি ইউনিয়নে কর্মরত শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মোফাজ্জল হোসেন মানিক এ ঘটনায় জড়িত।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও অবগত হয়েছেন।
ভিডিও ও অডিও বার্তায় টেংরা গ্রামের মৃত সিরাজুল হকের ছেলে আজিজুল হককে বলতে শোনা যায়, প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে চেষ্টা করেও তিনি টিকাকেন্দ্র থেকে করোনার টিকা নিতে পারেননি। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে ২০০ টাকার বিনিময়ে শনিবার টিকা দেন।
একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিন জানান, তার বাড়ির ৮ জন টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তের কাছ থেকে টিকা নিয়েছেন। ওই গ্রামের খোরশেদ আলমও একই অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস জানান, ভিডিও ফুটেজ ও অডিওবার্তা তিনি শুনেছেন। অভিযুক্ত মোফাজ্জল হোসেন তার কাছে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ভিডিও ও অডিও থেকে প্রাথমিকভাবে তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর জন্য অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। বিষয়টি প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা ইপিআই প্রযুক্তিবিদ আমজাদ হোসেন জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রচলিত প্রক্রিয়ায় ২৪ ঘণ্টার বেশি বাইরে সংরক্ষণ করলে করোনা টিকার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা থাকে। ভায়াল খোলা হলে ১২ ঘণ্টা এর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা থাকে।
বিএসডি/ এলএল