বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট গ্রহণের দিন দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনার জেরে পাল্টা হামলায় আরও একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত একটার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তির নাম শাহ আলম খান (৫৪)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২১ জুন ভোট গ্রহণের দিন খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুই সদস্য প্রার্থী ফিরোজ মৃধা ও মন্টু হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বিজয়ী প্রার্থী ফিরোজ মৃধার চাচাতো ভাই মৌজে আলী মৃধা (৬৪) নিহত হন। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার নিহত মৃধার ছেলে মো. নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় ১০১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। গতকাল দুপুরে গৌরনদী বন্দরের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে থানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিক্ষোভ শেষে ফেরার পথে বিক্ষুব্ধরা দক্ষিণ কমলাপুর গ্রামের বেইলি ব্রিজের পাশে শাহ আলম খানের বাড়ির সামনে এসে মন্টু হাওলাদারের ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দেন। এ সময় বাড়ি থেকে বের হয় শাহ আলমের ভাতিজা অপু (১৫) ও ভাগনে সাগর সরদার (১৭)। মিছিলকারীরা কিশোর অপু ও সাগরকে মারধর করেন। দুজনের কান্নার শুনে তাঁদের রক্ষায় শাহ আলম এগিয়ে আসলে তাঁর ওপর হামলা চালান বিক্ষুব্ধরা। গুরুতর আহত অবস্থায় শাহ আলমকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার দিবাগত রাত ১টায় শাহ আলম মারা যান।
নিহত শাহ আলম খানের চাচাতো ভাই আজিবর খান অভিযোগ করেন, মিছিলকারীরা ভাগনে ও ভাতিজাকে মারধর করলে শাহ আলম খান তাঁদের রক্ষায় এগিয়ে যান। এ সময় ফিরোজ মৃধার সমর্থক জাকির হোসেন মৃধা, হাদিস সরদার, কামাল সরদার, সালাম মৃধাসহ ১৫ থেকে ২০ সন্ত্রাসী শাহ আলমকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে মৌজে আলী মৃধা হত্যা মামলায় সদ্য বিজয়ী ইউপি সদস্য ফিরোজ মৃধাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ফলে এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।