নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী মো. আজিমসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় ছয়জন সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
শনিবার (২৩ জুলাই) র্যাব-৭ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- চবির ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আজিম (২৩) ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুল আবছার বাবু (২২) এবং হাটহাজারী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নুর হোসেন শাওন (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা মাসুদ (২২)।
এ ঘটনায় আরও দুইজন পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে গ্রেপ্তারে র্যাব অভিযান চালাচ্ছে। আটকরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, হাটহাজারী ও রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনের সম্পৃক্ততা পেয়ে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনায় জড়িত তিন জন চবি শিক্ষার্থী। বাকিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না হলেও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় অবস্থান করে।
তিনি বলেন, মূল অভিযুক্ত আজিম ইতিহাস বিভাগের ছাত্র। তার নেতৃত্বই এ ঘটনা ঘটে। তার বাসাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এলাকায়। আজিম ক্যাম্পাস এলাকায় একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। তার নেতৃত্বে ছয়জন দুটি মোটরসাইকেল যোগে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, প্রথমে আজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে বাকি ৫ জনের নাম পাওয়া যায়। ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দুটি ছিল সাইফুল ও শাওনের।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে কোনোরকম পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া। ভিকটিম ও অপরাধীরা কেউ কাউকে আগে থেকে চিনত না। এ ছয়জন বাইরে কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে সবার সহযোগিতা পেয়েছি।
তিনি বলেন, গত ১৭ জুলাই রাতে সাড়ে ১০টার দিকে বন্ধুর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকা থেকে হলের দিকে ফিরছিলেন ওই ছাত্রী। আজিম ও তার গ্রুপ চবি এলাকায় রাতে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় হয়রানির শিকার ছাত্র ও তার ছেলে বন্ধুর দিকে হঠাৎ নজর পড়ে আসামিদের। তারা গিয়ে প্রথমে ছাত্রী ও তার ছেলে বন্ধুকে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে তারা মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়। তাদের দুজনকে আটকে রেখে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে অভিযুক্তরা। মারধরের একপর্যায়ে ছাত্রীটিকে বিবস্ত্র করে ফেলে আসামিরা। এছাড়া শ্লীলতাহানি করে ও ভিডিও ধারণ করে। এরপর তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে ছেড়ে দেয়।
তিনি বলেন, আসামিরা তিনটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। মোবাইল তিনটি জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আজিমের আর দুটি মোবাইল ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুর। তাদেরকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হবে।
কেএম/ওএফ