ফরিদপুর প্রতিনিধি:
দুদিনের টানা বর্ষণে ফরিদপুর চরভদ্রাসন উপজেলার ১ হাজার ৫৭ হেক্টর ফসলী জমি বৃষ্টির পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে পানিতে পূর্ণ নিমজ্জিত ও অর্ধ নিমজ্জিত ফসল রয়েছে। শাকসব্জি, পিয়াজ, রসুন, মসুরী, ছোলা, কালোজিরা, ভূট্টা জাতীয় ফসল ক্ষতির সম্ভাবনা বেশী। আবহাওয়া ভাল হলে নিরুপণ করা হবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান।
গ্রামের বাসিন্দা কৃষক শেখ সোরমান (৬৪) বলেন, তিনি ৫২ শতাংশ জমিতে দানা পিয়াজ ও খেসারী কলই চাষ করেছিলেন। এতে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ফলন ভাল হলে ওই জমি হতে ১ লক্ষ টাকা আয়ের আশা করেছিলেন। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সমূদয় ফসলই বিনষ্ট হয়ে গেল।
ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা মনির খান বলেন, চর ঝাইকান্দা ইউনিয়নের চর কল্যানপুর গ্রামে তিনি ১০ বিঘা জমিতে কালোজিরা ও ৩৮ বিঘয়ে মটর কলই বুনেছিলেন এতে তার খরচ হয়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। ভাল ফলন হলে ৫ হতে ৬ লক্ষ টাকা আয় করতে পারতেন। কিন্তু ফসলের মাঠে এখন বুক সমান পানি। দুই তিন দিনের আগে পানি নামার সম্ভাবনা নেই। মটর কলই হতে কিছু আয় হলেও কালোজিরার কোন সম্ভাবনা নেই। তার সকল স্বপ্ন পানিতে ডুবে গেছে।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খান বলেন, গত কয়েক বছরের ভিতর এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন হয়নি কৃষকেরা। বর্ষার রেষ কাটিয়ে উঠে নতুন করে চাষবাদ করেছিল সকলে। বৃষ্টির কারণে সরকারী প্রনোদনা পাওয়া কৃষকসহ সকল কৃষকই ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হলো। তিনি কৃষি প্রনাদনা বৃদ্ধির জন্য উর্ধ্বতনদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
চর হরিরামপুর ও গাজীরটেক ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানগনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই এলাকার কৃষকগনও ব্যপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। কৃষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ মন্ডল বলেন, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ১০৫৭ হেক্টর ফসলী জমি অতিবৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে শাকশব্জি ৩০ হেক্টর, পিয়াজ ৫৮ হেক্টর, রসুন ৬ হেক্টর, মুসুরী ৯৭ হেক্টর, কালোজিরা ৭৫ হেক্টর, ভূট্টা ৩৯ হেক্টর, মাসকালাই ১৯ হেক্টর, মেথি ১৮ হেক্টর, গম ২৫ হেক্টর, খেসারী ১৮০ হেক্টর, মটর কলই ১৩০ হেক্টর, গোল আলু ২ হেক্টর, ধনিয়া ৮৬ হেক্টর, সরিশা ২৯০ হেক্টর। আবহাওয়া ভাল হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা হবে।
বিএসডি/ এলএল