ঢাকার আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বাসচালক সুমন (২৪)। অপর পাঁচ আসামির প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শাহাজাদী তাহমিদা আজ শনিবার এই আদেশ দেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।
পুলিশ জানায়, রিমান্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হলেন চালকের সহকারী আনোয়ার, মো. আরিয়ান (১৮), সাজু (২০), সোহাগ (২৫) ও সাইফুল ইসলাম (৪০)। এর আগে পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের প্রত্যেকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। চলন্ত বাসে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন আসামি বাসচালক সুমন। এ ছাড়া দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা শেষ হয়। শনিবার দুপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ওই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা হয়।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সেলিম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এর আগে ওই তরুণী আজ সকালে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। এরপর ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী নারী নারায়ণগঞ্জে স্বামী ও সন্তান নিয়ে থাকেন। তিনি সেখানে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাঁর স্বামীর বাড়ি লালমনিরহাটে। আশুলিয়া থানা-পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারীর বোন মানিকগঞ্জে থাকেন। গতকাল শুক্রবার তিনি বোনের বাসায় যান। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে নারায়ণগঞ্জে নিজের বাসায় ফেরার জন্য তিনি বাসে ওঠেন। রাত আটটার দিকে আশুলিয়ার নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে তাঁকে নামিয়ে দেওয়া হয়। বাসের জন্য তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত নয়টার দিকে নিউ গ্রামবাংলা পরিবহনের একটি মিনিবাসের চালকের সহকারী মনোয়ার ও সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম এসে টঙ্গী স্টেশন রোডের কথা বলে তাঁর কাছে ৩৫ টাকা ভাড়া চান। তিনি মিনিবাসে উঠলে গন্তব্যে যাওয়ার আগেই সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
চালক বাসটি নিয়ে আবার নবীনগরের দিকে রওনা হন। এ সময় বাসের জানালা ও দরজা আটকে বাসের চালক, সহকারীসহ ছয়জন ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। টহল পুলিশ বাসটি থামিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। এ সময় ওই ছয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।