আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা। চীনের উত্থানে উদ্বিগ্ন দুই মিত্র ব্যবসা ও নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করলেও বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
টোকিওতে বাইডেন প্রশাসনের রাষ্ট্রদূত রাহম ইমানুয়েল জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের শুরুর দিকে ইশিবার হোয়াইট হাউজ সফর টোকিওর জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
তিনি আরও বলেন, ওভাল অফিসে এখন পর্যন্ত মাত্র দুইজন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানো হয়েছে: একজন ইসরায়েলের নেতানিয়াহু, আরেকজন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। এটি একটি ভালো দিক এবং ইতিবাচক সংকেত।
ট্রাম্পের সঙ্গে প্রয়াত জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে তার তেমন কোনও সম্পর্ক নেই। এটি পরিবর্তন করতে চায় জাপানি সরকার। তারা ট্রাম্পকে জাপান সফরের আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা করছে।
দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম তিন সপ্তাহেই প্রচলিত নিয়ম ভেঙে কানাডা থেকে শুরু করে কলম্বিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছেন ট্রাম্প। তবে তিনি ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্রদের সঙ্গে তুলনামূলক ঐতিহ্যবাহী নীতি অনুসরণ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপাইন।
ট্রাম্প চীনের সব আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যাকে তিনি ‘প্রাথমিক ধাক্কা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির মধ্যে সংঘাতের ফলে ভোক্তা ও ব্যবসাগুলো নতুন পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে।
এছাড়া জাপান একটি বাণিজ্য-নির্ভরশীল দেশ, যা রপ্তানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এবং খাদ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া, জাপানের অনেক প্রতিষ্ঠান চীনের বাজারে বিনিয়োগ করেছে এবং চীনের ওপর নির্ভরশীল।
টোকিওর দৃষ্টিভঙ্গি ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা দলের মতোই চীনের বৈশ্বিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং এশিয়ায় বেইজিংয়ের বিস্তৃত আঞ্চলিক দাবি, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ চিপ উৎপাদনকারী দ্বীপ তাইওয়ান নিয়ে।
এদিকে জাপানও প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করবেন, যেন তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫৬ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমানোর জন্য কিছু ছাড় দেয় এবং শুল্ক সংক্রান্ত হুমকি থেকে মুক্তি পায়।
রয়টার্সকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, টোকিও কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত। এছাড়া, সফটব্যাংকের সিইও মাসায়োশি সন যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ক্ষেত্রে শত শত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ফলে দুই নেতার বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সেমিকন্ডাক্টর চিপ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোই আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।