চুয়াডাঙ্গায় করোনা শনাক্তে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪১ জনেরই করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার শতভাগ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দুজন এবং করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সিভিল সার্জনের কার্যালয় আজ বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা এবং চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নে লকডাউন চলাকালে করোনায় শতভাগ সংক্রমণের হার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাবিয়ে তুলেছে।
জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লকডাউন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৫২টি মামলায় ৫৪ জনকে ৭৪ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় দুজনকে কারাদণ্ড এবং ৩০টি ইজিবাইক জব্দ করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনায় মৃত দুজন হলেন সদর উপজেলার কুন্দিপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান ও জীবননগর পৌর এলাকার দৌলতগঞ্জপাড়ার সুফিয়া খাতুন। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মারা যাওয়া চারজন হলেন জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামের আবদুস সোবহান (৬০), দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের রুহুল আমীন (৭৯), নতুন বাস্তপুর গ্রামের আবু বক্কর (৭৫) ও জগন্নাথপুর গ্রামের শাহিদা বেগম (৭০)।
ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের প্রধান সমন্বয়ক ও সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফাতেহ আকরাম বলেন, চিকিৎসাধীন ওই চারজন গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে মারা যান। মৃত চারজনের নমুনা সংগ্রহের পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
যে ৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, তাঁদের ১৯ জনের বাড়ি সদর উপজেলায়। এ ছাড়া ১৪ জনের বাড়ি জীবননগর উপজেলায়, ৭ জনের বাড়ি আলমডাঙ্গা উপজেলায় এবং ১ জনের বাড়ি দামুড়হুদা উপজেলায়। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৯২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ১২ হাজার ৫১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৬৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৮৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন অন্তত ৯১ জন।
উপজেলাভিত্তিক সর্বশেষ তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সদর উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ৩১৭। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৭২ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। দামুড়হুদা উপজেলায় মোট আক্রান্ত ৬৮৬ জন, চিকিৎসাধীন ২০৫ ও মারা গেছেন ২৮ জন। আলমডাঙ্গা উপজেলায় মোট আক্রান্ত ৪৬৩ জন, চিকিৎসাধীন ৯৪ জন ও মারা গেছেন ১৯ জন এবং জীবননগর উপজেলায় মোট আক্রান্ত ৩৭১ জন, চিকিৎসাধীন ১২৬ জন ও মারা গেছেন ১০ জন।