জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন একাডেমিক ভবনের লিফট বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ১৩ তলা পর্যন্ত সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ তলা বিশিষ্ট নতুন একাডেমিক ভবনে রয়েছে মাত্র চারটি লিফট। এই ৪ লিফটেই প্রতিদিন উঠা-নামা করেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা -কর্মচারীসহ প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১টি লিফট শুধুমাত্র শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যে এবং বাকি ৩টি লিফট দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ সবাই উঠানামা করে থাকেন। মাঝেমধ্যে একটি কিংবা দুইটি লিফট অকেজো হয়ে পড়ে। এরমধ্যে গত তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে পরিবহন অফিসের সামনের লিফটি। আরও দেখা যায়, প্রতিদিনই লিফটের সামনে লেগে থাকে লম্বা লাইন। আধাঘন্টা থেকে ১ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকেই লিফটে উঠতে পারেন না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একেকটি লিফটের ধারণক্ষমতা প্রায় ৮০০-১০০০ কেজি। একবারে একটি লিফটে সর্বোচ্চ ১৫-১৬ জন উঠতে বা নামতে পারে। এর মধ্যে ১নং লিফটটি শুধুমাত্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যে বরাদ্দ হলেও, সেটি মাত্র ৬ তলা পর্যন্ত উঠা-নামা করতে পারে। ফলে প্রায় সময় ২ , ৩ ও ৪ নম্বর লিফটে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করতে হয়। তবে বর্তমানে ৪ নম্বর লিফটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ থাকায় ভোগান্তি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহমিদা আনিকা বলেন,’ সম্প্রতিআমি দুর্ঘটনার স্বীকার হই এবং পায়ে ব্যাথা পাই। আমার ক্লাস ৮ তলায়। আগে নিয়মিত সিঁড়ি বেয়ে উঠানামা করলেও এখন পারিনা। কিন্তু ক্লাস টাইমে দীর্ঘ লাইন থাকে। দীর্ঘ এই লাইনের জন্য সহজে লিফট ধরতে পারি না। ফলে প্রায় সময় ক্লাস শুরু হয়ে গেলেও ক্লাসে ঢুকতে দেরি হয়ে যায়।’
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিন বলেন, ‘অন্য সময় কষ্ট করে হলেও সিঁড়ি দিয়ে উঠা যায়, কিন্তু সমস্যা হয় পরীক্ষার সময়। সে সময় লিফট ধরতে না পারলে সিঁড়ি বেয়ে উঠলে শরীরে ক্লান্তি লাগে আবার পরীক্ষার সময়ও নষ্ট হয়ে যায়। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা উচিত।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সঙ্গীত বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের ক্লাস হয় ১২ তলায়। আমাদের বিভাগে প্রায় সময় পরীক্ষা থাকে, তাই আমাদের শাড়ি পড়ে আসতে হয়। শাড়ি পড়ে কোনোভাবেই হেঁটে উঠা সম্ভব না। আবার দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে যায়। পিছনের একটা লিফট বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। সেটা চালু থাকলেও লাইন কিছুটা কম থাকে। সেটা কেন বন্ধ থাকে সেটাও জানি না, অন্তত ক্লাস টাইমে চালু রাখা উচিত।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে আমরা চার নম্বর লিফটটি নতুন লাগিয়েছিলাম, যে কোম্পানির কাছ থেকে আমরা লিফট নিয়েছিলাম তাদের সাথে আমাদের সার্ভিসিংয়ের চুক্তি ছিল না। এখন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় লিফট সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ আছে। আমরা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে কথা বলে দ্রুত সমস্যাটির সমাধান করতে চেষ্টা করছি।’
বিএসডি/এফএ